ঢাকা ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৫ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত

বিস্ফোরণে উড়ে গেল পুলিশের কব্জি, রণক্ষেত্র গাজীপুর

নওরোজ অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ০৬:৪০:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩
  • / ১৪০ Time View

মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গাজীপুর। সেখানে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় পুলিশের এপিসি কারে এক বিস্ফোরণে কয়েকজন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের হাতের কব্জি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আহত সব পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৮ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুরো নাওজোড় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি এখনো (সন্ধ্যা ৬টা) উত্তপ্ত রয়েছে।

যে পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এদের মধ্যে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের পাশাপাশি এপিসি কারে বিস্ফোরণেও আহত হওয়ার ঘটনা আছে।
মাহবুব আলম, গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান, আহতাবস্থায় পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।

এদের মধ্যে গুরুতর আহত পুলিশ সদস্য প্রবীর (৩০), ফুয়াদ (২৮) ও খোরশেদকে (৩০) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আশিকুল (২৭) ও বিপুলকে (২৪) হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে ফুয়াদের অবস্থা বেশি গুরুতর, তিনি ডান হাতের আঙ্গুল ও কব্জির নিচের অংশে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এপিসি কারের ভেতরে পুলিশ সদস্যদের অসাবধানতায় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যরা আহত হন। একজনের হাতের কব্জি মারত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই বিস্ফোরণেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কারখানা শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, সফিপুর ও মৌচাকসহ আশপাশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন। বুধবার সকালেও আন্দোলনে নামেন পোশাক শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক নারী শ্রমিক নিহত হন। এরপর বেশ কয়েক ঘণ্টা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক ছিল।

দুপুরের পর কোনাবাড়ী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আবার সংঘর্ষে জড়ান শ্রমিকরা। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকায়ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এসময় পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য গুরুতর আহত হন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

পরে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র‌্যাবের সমন্বয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে শ্রমিকরা পিছু হটে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে ভাওয়াল বদলে আলম সরকারি কলেজের সামনের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, বুধবার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে মোট আটজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সকালে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন ও বিকেলে নাওজোড় এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচজন আহত হয়েছেন।

বিকেলে যে পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এদের মধ্যে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের পাশাপাশি এপিসি কারে বিস্ফোরণেও আহত হওয়ার ঘটনা আছে। এখন শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যাচ্ছে। পরিস্থিতি ক্রমেই স্বাভাবিক হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

৫ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত

বিস্ফোরণে উড়ে গেল পুলিশের কব্জি, রণক্ষেত্র গাজীপুর

নওরোজ অনলাইন ডেস্ক
Update Time : ০৬:৪০:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩

মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গাজীপুর। সেখানে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় পুলিশের এপিসি কারে এক বিস্ফোরণে কয়েকজন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের হাতের কব্জি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আহত সব পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৮ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুরো নাওজোড় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি এখনো (সন্ধ্যা ৬টা) উত্তপ্ত রয়েছে।

যে পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এদের মধ্যে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের পাশাপাশি এপিসি কারে বিস্ফোরণেও আহত হওয়ার ঘটনা আছে।
মাহবুব আলম, গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান, আহতাবস্থায় পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।

এদের মধ্যে গুরুতর আহত পুলিশ সদস্য প্রবীর (৩০), ফুয়াদ (২৮) ও খোরশেদকে (৩০) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আশিকুল (২৭) ও বিপুলকে (২৪) হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে ফুয়াদের অবস্থা বেশি গুরুতর, তিনি ডান হাতের আঙ্গুল ও কব্জির নিচের অংশে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এপিসি কারের ভেতরে পুলিশ সদস্যদের অসাবধানতায় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যরা আহত হন। একজনের হাতের কব্জি মারত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই বিস্ফোরণেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কারখানা শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, সফিপুর ও মৌচাকসহ আশপাশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন। বুধবার সকালেও আন্দোলনে নামেন পোশাক শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক নারী শ্রমিক নিহত হন। এরপর বেশ কয়েক ঘণ্টা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক ছিল।

দুপুরের পর কোনাবাড়ী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আবার সংঘর্ষে জড়ান শ্রমিকরা। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকায়ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এসময় পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য গুরুতর আহত হন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

পরে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র‌্যাবের সমন্বয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে শ্রমিকরা পিছু হটে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে ভাওয়াল বদলে আলম সরকারি কলেজের সামনের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, বুধবার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে মোট আটজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সকালে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন ও বিকেলে নাওজোড় এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচজন আহত হয়েছেন।

বিকেলে যে পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এদের মধ্যে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের পাশাপাশি এপিসি কারে বিস্ফোরণেও আহত হওয়ার ঘটনা আছে। এখন শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যাচ্ছে। পরিস্থিতি ক্রমেই স্বাভাবিক হচ্ছে।