ঢাকা ০১:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ইসির নিবন্ধন সার্টিফিকেট পেয়েছে এনসিপি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ভবিষ্যত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পথচলার রূপরেখা অঙ্কন করবে: ইসি সানাউল্লাহ আরেক মামলায় বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন জয় আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান পাচারের অর্থ ফেরত আনার সক্ষমতা বর্তমান সরকারের নেই : রেজা কিবরিয়া দাম কমিয়ে বৈধ আমদানি বাড়াতে মোবাইল ফোনে শুল্ক কমছে খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা ধোঁকা দেওয়ার দিন শেষ : চরমোনাই পীর ঢাকা কলেজের সামনে সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের সচিবের দায়িত্বে হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ বৈধ: আপিল বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:২৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২০ Time View

সুপ্রিম কোর্ট

অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথের বৈধতা প্রশ্নে দায়ের করা রিট মামলায় আপিলের অনুমতির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ফলে মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শপথের বৈধতা নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন থাকছে না।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারকের পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার রিটকারীপক্ষের লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামতের প্রক্রিয়া নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে রিট আবেদনটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ।

শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ১৩ জানুয়ারি আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেয়। হাই কোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ আদেশ পরে প্রকাশিত হয়।

এতে বলা হয়, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কোনো আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত নয় বলে রিট আবেদনকারীর বক্তব্যে এসেছে।

“উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এক অনন্য পরিস্থিতিতে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী উপদেষ্টামূলক মতামত গ্রহণ করেন। মতামত অনুযায়ী কাজ করেছেন। তাই এটি আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার দ্বারা সমর্থিত।”

আদালত পর্যবেক্ষণে আরও বলেছিল, “২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টে যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল, তা আমাদের ইতিহাসের অংশ এবং আশা করি আগামী বহু বছর ধরে জনগণ যত্নে থাকবে।”

রিটটি ভ্রান্ত ধারণা, বিদ্বেষপ্রসূত ও হয়রানিমূলক বলে উল্লেখ করে তা সরাসরি খারিজ করা হয়। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ারের বিষয়ে বলা আছে।

অনুচ্ছেদটিতে বলা হয়েছে, “যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয়, আইনের এরূপ কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহলে তিনি (রাষ্ট্রপতি) প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করতে পারবেন। ওই বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করতে পারবেন।”

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত বছরের ৬ অগাস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন। তার দুদিন পর ৮ অগাস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার সদস্যরা শপথ নেয়।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান।

রাষ্ট্রপতির বিশেষ রেফারেন্সের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ গত বছরের ৮ অগাস্ট মতামত দেয়; অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শোনা হয়।

আদালতের মতামতে বলা হয়, “রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্যপরিচালনার নিমিত্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি ওইরূপ নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করাতে পারবেন।”

Please Share This Post in Your Social Media

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ বৈধ: আপিল বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ১১:২৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথের বৈধতা প্রশ্নে দায়ের করা রিট মামলায় আপিলের অনুমতির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ফলে মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শপথের বৈধতা নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন থাকছে না।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারকের পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার রিটকারীপক্ষের লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামতের প্রক্রিয়া নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে রিট আবেদনটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ।

শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ১৩ জানুয়ারি আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেয়। হাই কোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ আদেশ পরে প্রকাশিত হয়।

এতে বলা হয়, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কোনো আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত নয় বলে রিট আবেদনকারীর বক্তব্যে এসেছে।

“উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এক অনন্য পরিস্থিতিতে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী উপদেষ্টামূলক মতামত গ্রহণ করেন। মতামত অনুযায়ী কাজ করেছেন। তাই এটি আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার দ্বারা সমর্থিত।”

আদালত পর্যবেক্ষণে আরও বলেছিল, “২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টে যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল, তা আমাদের ইতিহাসের অংশ এবং আশা করি আগামী বহু বছর ধরে জনগণ যত্নে থাকবে।”

রিটটি ভ্রান্ত ধারণা, বিদ্বেষপ্রসূত ও হয়রানিমূলক বলে উল্লেখ করে তা সরাসরি খারিজ করা হয়। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ারের বিষয়ে বলা আছে।

অনুচ্ছেদটিতে বলা হয়েছে, “যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয়, আইনের এরূপ কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহলে তিনি (রাষ্ট্রপতি) প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করতে পারবেন। ওই বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করতে পারবেন।”

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত বছরের ৬ অগাস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন। তার দুদিন পর ৮ অগাস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার সদস্যরা শপথ নেয়।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান।

রাষ্ট্রপতির বিশেষ রেফারেন্সের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ গত বছরের ৮ অগাস্ট মতামত দেয়; অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শোনা হয়।

আদালতের মতামতে বলা হয়, “রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্যপরিচালনার নিমিত্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি ওইরূপ নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করাতে পারবেন।”