প্রশ্ন রিজভীর
ফেরি করা সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?
- Update Time : ১০:৪২:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩
- / ৩০০ Time View
সরকারদলীয় এক সংসদ সদস্য দেশে ফেরি করে কিছু দিন পর বিদ্যুৎ বিক্রি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছিলেন। সে বক্তব্যকে সামনে এনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন, ফেরি করা সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে ঢাকা জেলা বিএনপি আয়োজিত পল্টনের জোনাকী সিনেমা হলের সামনে থেকে লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিদ্যুৎ ভবন অভিমুখে পূর্বনির্ধারিত মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচির প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন করেন।
রিজভী দেশের বিদ্যুতের বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানিয়ে বলেন, ‘আজকে দেশের প্রায় ১৫৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ৪৯টি কেন্দ্র চালু আছে। বাকি ১০৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আপনাদের শতভাগ বিদ্যুৎ কোথায় গেল? আপনার এক এমপি বলেছেন, দেশে ফেরি করে নাকি বিদ্যুৎ বিক্রি হবে, তাহলে ফেরি করা সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এ কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য দুঃশাসনের অবসান করা। কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী শাসনের অবসান করা। আপনারা (আওয়ামী লীগ) জনগণের অধিকারকে কারাবন্দি করেছেন, সারা দেশকে বন্দিশালায় পরিণত করে রেখেছেন। এই অবস্থার অবসানের জন্য আজকে সকল গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ।’
অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জনগণের শক্তির কাছেই মাথানত করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বিদেশি চাপের কাছে আমি মাথা নত করবো না, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আপনাকে জনগণের শক্তির কাছেই মাথা নত করতে হবে। আমাদের সীমান্তে যখন আমাদের লোককে গুলি করে তখন তো আপনাকে মাথা উঁচু করে থাকতে দেখি না। একটা প্রতিবাদও আপনাকে করতে দেখি না।আপনি গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে ফেরি করে বিক্রি করে দিয়েছেন।’
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) অসহনীয় লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতির প্রতিবাদে বিএনপির পূর্বঘোষিত মতিঝিল বিদ্যুৎ ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে মিছিল সহকারে নয়াপল্টনস্ত সিটিহাট মার্কেটের সামনে থেকে রিজভীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আরামবাগ নটরডেম কলেজের সামনে গেলে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। অবস্থান কর্মসূচির মিছিলটি পল্টন মোড় হয়ে বিদ্যুৎ অফিস অভিমুখে যাওয়ার সময় নটর ডেম কলেজের সামনে পুলিশের বাধা পেয়ে শেষ করে।
অবস্থান শেষে ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক এবং সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি দেয়ার উদ্দেশ্যে মতিঝিলের ওয়াপদা ভবনে যান এবং স্মারকলিপি প্রদান করেন।
রিজভী বলেন, আজকে সরকারের পতন অত্যাসন্ন। এই বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ১৫৪টি প্লান্ট তার মধ্যে শুধু মাত্র ৪৯টি কোন রকম চালু আছে ১০৪টি প্রায় বন্ধ। এগুলো তাহলে কোথায় গেল আপনার (সরকারের) এক এমপি বলেছিলেন ফেরি করে নাকি বিদ্যুৎ বিক্রি হবে সেই ফেরির বিদ্যুৎ কোথায় গেল?
প্রধানমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ফেরি করে বিক্রি করেছেন অন্যের কাছে। জনগণের অধিকারকে কারাবন্দি করেছেন, গোটা দেশকে আপনি বন্দিশালা করেছেন। এসব কিছুর অবসানের জন্য জাতীয়তাবাদী সকল গণতান্ত্রিক শক্তি আজকে ঐক্যবদ্ধ দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রেরণায়।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা যে দুর্জয় সাহস নিয়ে আজকে যে কর্মসূচি পালন করছেন এই কর্মসূচি থেমে থাকবে না। আমাদের এই কর্মসূচির লক্ষ দু:শাসনের অবসান করা,কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান করা।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু, নির্বাহী কমিটির সদস্য তমিজ উদ্দীন, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওসার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।