পুলিশের ৬৩২ জনের তালিকা তৈরি করেছে বিএনপি
- Update Time : ১২:২৭:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুন ২০২৩
- / ১৭২ Time View
বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে গুম-খুন এবং নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত– এমন অভিযোগ এনে পুলিশের ৬৩২ জনের তালিকা তৈরি করেছে বিএনপি। বিদেশি দূতাবাস ও মানবাধিকার সংস্থায় এদের বিরুদ্ধে নালিশ করছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এসব অন্যায়-অপকর্মের জন্য তাঁদের শাস্তি হওয়া দরকার। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী মানুষের মৌলিক মানবাধিকার হরণকারীদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন। দেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেওয়া কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী সরকারকে সহযোগিতাকারী পুলিশের সদস্যদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশে জনগণের ট্যাক্সে বেতনধারী কর্মচারীরা সেই জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর বিষয়ে দায়ীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করার সময় আসছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এসব প্রমাণ ও নথি প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করা হবে। তথ্যগুলো আন্তর্জাতিক মহলেও তুলে ধরা হবে।
বিএনপি পুলিশ সদস্যদের তালিকা করে বিদেশি বন্ধু রাষ্ট্রের দূতাবাস কিংবা বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থায় দিয়েছে কিনা কিংবা দেবে কিনা– জানতে চাইলে বিএনপির কূটনৈতিক উইংয়ের চেয়ারম্যান ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার রক্ষায় গণতান্ত্রিক বন্ধু রাষ্ট্র, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাও এটা জানতে চায়। এসব রাষ্ট্র ও সংস্থা নিজেদের মতো করে তথ্য সংগ্রহ করে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের তালিকা করে বিদেশিদের কাছে নালিশের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপি এখন দিক হারিয়ে যাচ্ছেতাই করছে। বিএনপি এ রকম তালিকা করে রাষ্ট্রের ভেতরে আতঙ্ক তৈরি করতে চায়। কিন্তু রাষ্ট্র কখনও আতঙ্কিত হবে না। রাষ্ট্র সব সময়ে নিজস্ব দায়িত্ব পালন করবে।
সাবেক সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান বলেন, পুরো বিষয়টি বেশ দুর্ভাগ্যজনক। একটি রাজনৈতিক দল কেন, কীভাবে এ তালিকা প্রণয়ন করেছে– সে সম্পর্কে তাঁরাই ভালো বলতে পারবেন। যদি তারা (বিএনপি) অভিযোগ করে তাদের কোনো নেতাকর্মী গুম, খুন হয়েছেন এবং এর পেছনে কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সম্পৃক্ত রয়েছেন– তাহলে তারা থানায় মামলা করতে পারত। থানায় মামলা না নিলে আদালতে যেতে পারতেন। নিম্ন আদালত মামলা না নিলে উচ্চ আদালতে যেতে পারতেন। দেশের আইনি পরিকাঠামোর মধ্যে না হেঁটে তারা যে পথে গেছে তাতে প্রতীয়মান হয়– আইন ও বিচার কাঠামোর ভেতরে হয়তো কখনও কখনও বিচ্যুতি ঘটেছে বা তাদের আইনের প্রতি আস্থাশীল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়গুলো বিদেশি বন্ধুদের কাছে তুলে ধরলে অনেক সময় তারা আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে থাকেন। এ পুরো বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে সারাদেশে দলের ৮২টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৪৮টি জেলা ও মহানগরের তথ্য সংগ্রহ করেছে দলটি। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পুলিশের সর্বোচ্চ পদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন থানায় কর্মরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও এসআই পর্যন্ত সারাদেশে ৬৩২ জনের তালিকা করেছে। এ তালিকা জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের ঢাকার দূতাবাসে দেওয়া হয়েছে।