নারী কেলেঙ্কারির সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক নাদিমকে হত্যা: র্যাব
- Update Time : ০২:৩৯:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩
- / ২৬৬ Time View
নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর পরিকল্পনায় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে হত্যা করা হয়।
শনিবার (১৭ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান বাবু জানায়, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাংবাদিক নাদিমকে হত্যা করা হয়েছে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, সাংবাদিক নাদিম সম্প্রতি বাবুর অপকর্ম নিয়ে অনলাইন পোর্টালে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক নাদিমকে বিভিন্নভাবে হুমকিসহ তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। পরে ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি খারিজ করে দেন। মামলা খারিজের বিষয়টি নিয়ে ভিকটিম নাদিম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ায় বাবু আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক নাদিমকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
তিনি বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ জুন (বুধবার) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ভুক্তভোগী সাংবাদিক নাদিম বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় বাবু তার সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্জন স্থানে ওৎ পেতে থাকেন। সাংবাদিক নাদিম তার সহকর্মীসহ মোটরসাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বাবুর সন্ত্রাসীরা তাকে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পরে পেছন থেকে দৌড় দিয়ে বাবুর আরও কয়েকজন লোক এসে তাকে মারতে মারতে পাশের একটি অন্ধকার গলিতে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যান এবং এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন।তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সাংবাদিক নাদিম হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে র্যাব।
শনিবার দুপুরে র্যাব-১৩ এর সহযোগিতায় সাংবাদিক নাদিমকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু, মনির ও জাকিরকে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে ইউপির চেয়ারম্যান মাহমুদুলকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নামল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২৫ জনকে আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
নিহত সাংবাদিক নাদিম বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের জামালপুর ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ছিলেন।মাহমুদুল আলম বাবু সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাকে শুক্রবার রাতে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ। তার নির্দেশেই সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজন ও সহকর্মীদের। পুলিশও প্রাথমিক তদন্তে এ অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে।
গত বুধবার রাত ১০টার দিকে বাড়িতে ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাটহাটি মোড়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। এ সময় তাকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।