ঢাকা ১০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধারের টাকা ফেরত চাওয়ায় পুত্রবধূকে গায়ে কেরোসিন দিয়ে হত্যা, অবশেষে গ্রেপ্তার

Reporter Name
  • Update Time : ১১:১৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩
  • / ২৬৫ Time View

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর: ধারের টাকা ফেরত চাওয়ায় পুত্রবধূকে গায়ে কেরোসিন দিয়ে হত্যা করেছিল শ্বশুড় ও ননদ। রংপুরের মাহিগঞ্জের চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় শ্বশুড় ও ননদকে গ্রেপ্তারের পর এই তথ্য জানালো র‌্যাব-১৩।

গতকাল বুধবার (১২ এপ্রিল) রাত পৌনে ১১ টায় র‌্যাব-১৩ রংপুর সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই তথ্য জানান অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

র‌্যাব-১৩ অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, রংপুর মহানগরীর নাচনিয়া মাহিগঞ্জ এলাকার স্বপন মিয়ার স্ত্রী সালমা বেগম (২৩) এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। সেই টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নেয় তার ননদ খাসবাগ এলাকার রমজান আলীর স্ত্রী আলেমা বেগম (৩২)। এর কয়েক মাস পর গত ২৪ মার্চ সেই টাকা ননদ আলেমার কাছে ফেরত চায় সালামা। এনিয়ে শুরু হয় পারিবারিক বিরোধ এবং ঝগড়া।

গত ২৮ মার্চ এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক এবং ঝগড়া শুরু হলে সালমার স্বামী স্বপন এর প্রতিবাদ করেন। স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে পিতা ও বোনের ওপর রাগারাগি করেন। এসময় সালমার শ্বশুড় আক্তার হোসেন ও ননদ আলেয়া বেগম সালেমা বেগমের ঘরে ঢুকে তাকে বেদম মারপিট করতে তাকে। এক পর্যায়ে সালমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়।

র‌্যাব-১৩ অধিনায়ক আরও জানান, ঘটনার সময় স্বামী স্বপন মিয়া তার স্ত্রী সালমা বেগমকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও দগ্ধ হন। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করান। সালমার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী ইন্সটিটিউটে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩১ মার্চ মারা যায় সালমা বেগম।

এদিকে স্বামী স্বপন মিয়া চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে কিছুটা সুস্থ হয়েছে। কিন্তু সালমার মৃত্যুর পরপরই তার শ্বশুড় ও ননদসহ অন্যান্যরা গা ঢাকা দেয়।

কমান্ডার আরাফাত ইসলাম জানান, সামলার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা এবং পরবর্তীতে মৃত্যুর ঘটনায় তার মা বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। তখন ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-১৩। সেই প্রেক্ষিতে গোপন নজরদারির মাধ্যমে বুধবার (১২ এপ্রিল) সকালে মামলার প্রধান আসামি শ্বশুড় আক্তার হোসেন ও দ্বিতীয় আসামি ননদ আলেয়া বেগমকে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-১৩ এর অধিনায়ক জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কেরোসিন দিয়ে সালমাকে পুড়িয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন আসামিরা। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

ধারের টাকা ফেরত চাওয়ায় পুত্রবধূকে গায়ে কেরোসিন দিয়ে হত্যা, অবশেষে গ্রেপ্তার

Reporter Name
Update Time : ১১:১৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর: ধারের টাকা ফেরত চাওয়ায় পুত্রবধূকে গায়ে কেরোসিন দিয়ে হত্যা করেছিল শ্বশুড় ও ননদ। রংপুরের মাহিগঞ্জের চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় শ্বশুড় ও ননদকে গ্রেপ্তারের পর এই তথ্য জানালো র‌্যাব-১৩।

গতকাল বুধবার (১২ এপ্রিল) রাত পৌনে ১১ টায় র‌্যাব-১৩ রংপুর সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই তথ্য জানান অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

র‌্যাব-১৩ অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, রংপুর মহানগরীর নাচনিয়া মাহিগঞ্জ এলাকার স্বপন মিয়ার স্ত্রী সালমা বেগম (২৩) এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। সেই টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নেয় তার ননদ খাসবাগ এলাকার রমজান আলীর স্ত্রী আলেমা বেগম (৩২)। এর কয়েক মাস পর গত ২৪ মার্চ সেই টাকা ননদ আলেমার কাছে ফেরত চায় সালামা। এনিয়ে শুরু হয় পারিবারিক বিরোধ এবং ঝগড়া।

গত ২৮ মার্চ এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক এবং ঝগড়া শুরু হলে সালমার স্বামী স্বপন এর প্রতিবাদ করেন। স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে পিতা ও বোনের ওপর রাগারাগি করেন। এসময় সালমার শ্বশুড় আক্তার হোসেন ও ননদ আলেয়া বেগম সালেমা বেগমের ঘরে ঢুকে তাকে বেদম মারপিট করতে তাকে। এক পর্যায়ে সালমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়।

র‌্যাব-১৩ অধিনায়ক আরও জানান, ঘটনার সময় স্বামী স্বপন মিয়া তার স্ত্রী সালমা বেগমকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও দগ্ধ হন। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করান। সালমার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী ইন্সটিটিউটে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩১ মার্চ মারা যায় সালমা বেগম।

এদিকে স্বামী স্বপন মিয়া চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে কিছুটা সুস্থ হয়েছে। কিন্তু সালমার মৃত্যুর পরপরই তার শ্বশুড় ও ননদসহ অন্যান্যরা গা ঢাকা দেয়।

কমান্ডার আরাফাত ইসলাম জানান, সামলার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা এবং পরবর্তীতে মৃত্যুর ঘটনায় তার মা বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। তখন ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-১৩। সেই প্রেক্ষিতে গোপন নজরদারির মাধ্যমে বুধবার (১২ এপ্রিল) সকালে মামলার প্রধান আসামি শ্বশুড় আক্তার হোসেন ও দ্বিতীয় আসামি ননদ আলেয়া বেগমকে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-১৩ এর অধিনায়ক জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কেরোসিন দিয়ে সালমাকে পুড়িয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন আসামিরা। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।