দুই শিশুর মৃত্যু: ডিসিএস অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান ও এমডি গ্রেপ্তার
- Update Time : ১১:৪৭:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩
- / ৩৪৬ Time View
রাজধানী বসুন্ধরার বাসায় তেলাপোকার বালাইনাশকের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বালাইনাশক পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানির চেয়ারম্যান ও এমডিকে গ্রেপ্তার করেছে লালবাগ গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টাঙ্গাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ডিসিএস অর্গানাইজেশন লি. কোম্পানির চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান ও কোম্পানিটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফরহাদুল আমিন।
এর আগে ৫ জুন রাতে ওই কোম্পানির কর্মকর্তা টিটু মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই বাসায় তেলাপোকা মারার বিষ স্প্রে করেছিলেন।
দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় শিশুদের বাবা মোবারক হোসেন তুষার সোমবার তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন। সেটির তদন্ত চলছে।
এদিকে, মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তরা যাতে কোনোভাবেই পার না পান সে দাবি জানিয়েছেন তেলাপোকা মারার ওষুধের বিষক্রিয়ায় মারা যাওয়া দুই শিশু-কিশোরের বাবা তোবারক হোসেন তুষার।
বৃহস্পতিবার কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন,’আল্লাহ আমার দুই সন্তান নিয়ে গেছেন। যে প্রতিষ্ঠানের কারণে, পেস্ট কন্ট্রোল (পোকা-মাকড় নিয়ন্ত্রণ) করতে গিয়ে আমার দুই সন্তানকে হারাতে হলো। তারা যেন কোনোভাবেই পার না পান। আমরা যেন ন্যায় বিচার পাই।’
এই মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। তারা হলেন- ডিসিএস অর্গানাইজেশন লি. কোম্পানির চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান ও কোম্পানিটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফরহাদুল আমিন। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ।
সেই সংবাদ সম্মেলনে ভিডিও কলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তোবারক হোসেন।
এ সময় তিনি বলেন, কোনো কাজ আমরা না পারলে বিশেষজ্ঞদের ডাকি। কিন্তু তারা টাকার লোভে আমার দুইটা সন্তানকে মেরে ফেললো। আমি যতটা শুনেছি কোম্পানিটির স্প্রে করা বিষ বাসা বাড়িতে দেওয়ার বিষ ছিল না। এগুলো গুদামে স্পে করার জিনিস, অথচ তারা আমার বাসায় এগুলো করে।’
গত ২ জুন রাজধানীর বসুন্ধরায় আবাসিক এলাকায় স্প্রে করা বিষে দুই শিশু-কিশোরের মৃত্যু হয়। ডিবি বলছে, ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটির স্প্রে করা বিষ ছিল গুদাম, কারখানা বা বড় কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য। কিন্তু তারা সেটি বাসা বাড়িতে স্প্রে করেছে। আবার এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে কোনো ধরনের তথ্য দেয়নি।
তিনি বলেন, ২ জুন বসুন্ধরার আই ব্লকের একটি নতুন বাসায় পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিসের কর্মীরা তেলাপোকা মারার বিষ স্প্রে করেন। এর দুদিন পর ভুক্তভোগী পরিবারটি রবিবার ওই বাসায় ওঠে। বাসায় প্রবেশ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ৪ জুন সকালে শাহিল মোবারত জায়ান (৯) মারা যায়। একই দিন রাত ১০টায় মারা যায় শায়েন মোবারত জাহিন (১৫)।
এছাড়া শিশুদের মা শারমিন জাহান লিমা ও বাবা মোবারক হোসেন বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
এই ঘটনায় নিহতের বাবা গত ৫ জুন ডিসিএস অর্গানাইজেশনের তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা টিটু মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে ভাটারা থানা পুলিশ।