দিশাকে বিয়ে এবং দুই সন্তানের বিষয়ে মুখ খুললেন সালমান মুক্তাদির
- Update Time : ০৮:০৯:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মে ২০২৩
- / ১২৫ Time View
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা ইউটিউবার ও অভিনেতা সালমান মুক্তাদিরের বিয়ে নিয়ে। নিজের বিয়ের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পর থেকেই গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন জনপ্রিয় ইউটিউবার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সালমান মুক্তাদির।
অবশেষে স্থানীয় এক টিভি চ্যানেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দিশা ইসলামের সঙ্গে বিয়ে এবং তাদের দুই সন্তানের ব্যাপারে মুখ খুললেন সালমান। ঢাকার এক রেস্টুরেন্টের উদ্বোধনে উপস্থিত হওয়ার পর সালমান মুক্তাদিরের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কী দেখে তিনি স্ত্রী দিশা ইসলামের প্রেমে পড়লেন?
জবাবে সালমান বলেন, “সে আমার প্রকৃত সত্তাকে ভালোবেসেছে। সে আমার ভেতরে থাকা শিশুসত্ত্বাকে খুঁজে বের করেছে, যেটি শুধু আমিই জানতাম। আমি জানতাম আমাদের মধ্যকার বন্ধনটি ছিল সৃৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত উপহার। সেই সঙ্গে আমার জন্য কাউকে নিজের সবকিছু উৎসর্গ করতে দেখে আমি বুঝতে পারি, সেই আমার যোগ্য জীবনসঙ্গিনী।”
বিবাহিত জীবন কেমন উপভোগ করছেন জানতে চাইলে সালমানের জবাব, তিনি আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি সুখী। তিনি বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ আমি এখন খুবই ভালো অবস্থায় আছি। সাধারণত পরিবারের চাপে কিংবা পারিপার্শ্বিকতার প্রভাবে বিয়ের পিঁড়িতে বসে। সৌভাগ্যবশত আমার ক্ষেত্রে এসবের কিছুই হয়নি। কারণ আমার স্ত্রী আমাকে শ্রদ্ধার পাশাপাশি যোগ্য সাহচর্য দিয়েছে, যা অনেকেই তার সঙ্গীর কাছ থেকে পায় না।”
সালমান মুক্তাদির আরও বলেন, “বর্তমানে মানুষ নিজের ফোনের পাসওয়ার্ডও দিতে চায় না। কিন্তু সে আমার জন্য নিজের জীবনও দিয়ে দিতে চেয়েছিল। এ কারণেই আমি তাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই।”
স্ত্রী দিশা ইসলামের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সালমান বলেন, “তার সুন্দর ব্যক্তিত্বকে সংজ্ঞায়িত করতে আমার কয়েক বছর সময় লাগবে। শারীরিক এবং মানসিক দুই দিকেই সে শক্তিশালী। সবকিছু নিয়েই তার সম্যক জ্ঞান রয়েছে। এর আগে, সে একজনে সঙ্গে সম্পর্কে ছিল যে তাকে পরিপূর্ণভাবে শ্রদ্ধা করত না। এতে তার দোষ ছিল না, কারণ তার নিয়তিতে অন্য একজনের কাছে রাণীর মতো সম্মান পাওয়ার ভাগ্য লেখা ছিল। আমি তাকে রাণীর মতো রাখতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করব। আমি চাই আল্লাহ আমার নতুন পরিবার এবং সন্তানদের মানুষের খারাপ উদ্দেশ্য থেকে রক্ষা করুন।”
একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে সালমান ও দিশার প্রথমবারের মতো দেখা হয়। শুরুতে তারা পরস্পরের বন্ধু থাকলেও ধীরে ধীরে তাদের মনে একে অপরের জন্য ভালোবাসার জন্ম হয়। তবে দিশার পরিবার থেকে বন্ধুবান্ধব সবাই এ সম্পর্কের বিরুদ্ধে ছিল।
সালমান মুক্তাদির বলেন, “৭ মাস ধরে আমরা একে অন্যের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। পরিস্থিতির কারণে সে খুব চাপের মাঝে ছিল। আমার সঙ্গে জীবন কাটাতে সে সব দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেছে। মাকে যখন ওর কথা জানালাম, তিনি চমকে উঠলেন। কিন্তু আমি জোর দিয়ে জানালাম, সে-ই আমার একমাত্র চাওয়া।”
২১ বছর বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসার পাশাপাশি সালমান মুক্তাদিরের স্বপ্ন ছিল দুই কন্যাসন্তানের বাবা হওয়ার। সৌভাগ্যবশত নিজের যোগ্য জীবনসঙ্গিনীর সঙ্গে প্রিয় মুহূর্ত কাটানোর জন্য দুই মেয়েকে সন্তান হিসেবে পেয়ে তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সালমান বলেন, “কাকতালীয়ভাবে জীবন উপভোগ করতে আমি দুই মেয়েকে পেয়েছি। আমার বড় মেয়ের নাম আমাইরা এবং ছোট মেয়ের নাম আইরা। আমি যখনই ঘুম থেকে উঠি, আমি তাদের সঙ্গে খেলি এবং স্কুলে আনা-নেওয়া করি। আমি চাই আমার দুই মেয়ে বড় হয়ে তাদের মায়ের মতো মানুষ হোক।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (২ মে) আচমকা ফেসবুকে কয়েকটি ছবি শেয়ার করে নিজের বিয়ের ঘোষণা দেন সালমান। বিয়ের খবরের পর থেকেই নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানাতে শুরু করেন ভক্ত এবং তারকারা। তবে, অনেকের কাছেই বিষয়টা নিয়ে একটু ধোঁয়াশা তৈরি হয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে “প্র্যাংক” করায় অনেকেই তার বিয়ের খবর আদৌ সত্য কি-না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।
সব সংশয় দূর করতে মঙ্গলবার রাতে নিজেই ফেসবুক পোস্ট করে সালমান মুক্তাদির বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ্। বিয়েটা সত্যি। বাসার সামনের মসজিদে আমি ও আমার প্রিয় স্ত্রী বিয়ে করেছি। নতুন পরিবার শুরু করা নিয়ে আমরা খুবই ব্যস্ত ছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম বিয়েটাকে খুব সাধারণ রাখতে। এবং কোনো মিডিয়া কাভারেজ কিংবা সাক্ষাৎকারের বাইরে রাখতে।”
সালমান মুক্তাদিরের বিয়ের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে নানারকম চর্চার ঝড় বইছে। তার জবাবে সালমান বলেন, “যেসব মানুষ আমাদের সম্পর্কের মধ্যে বিষাক্ত ও নেতিবাচক কিছু খুঁজছেন, তারা কখনোই মানুষের সুখের সময়ে পাশে দাঁড়াতে পারে না। সময় দেওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।” সবশেষে সালমান মুক্তাদির লেখেন, “আমি এখন ভালো স্বামী হওয়ার চেষ্টা করব।”
উল্লেখ্য, সালমান মুক্তাদিরের ইউটিউব চ্যানেলের নাম “সালমান দ্য ব্রাউনফিশ”। ২০১২ সাল থেকে তিনি কন্টেন্ট বানিয়ে আসছেন। ১৬ লাখের বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে তার চ্যানেলটিতে। ইউটিউব জগতে দেশের সফলতম কনটেন্ট ক্রিয়েটর তিনি। বলা হয়, তাকে অনুসরণ করেই দেশে ইউটিউব-ফেসবুক কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের জোয়ার এসেছে। এজন্য অনেকে তাকে এই প্ল্যাটফর্মের “কিং” বলে অভিহিত করেন। সালমান বেশ কিছু নাটকেও অভিনয় করেছেন।