দলের নামধারী সন্ত্রাস চাঁদাবাজদের কঠিন হুশিয়ারি দিলেন তারেক রহমান
- Update Time : ০৮:৪০:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৪৭ Time View
বিএনপিকে সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে, এবং আগামী নির্বাচন অতীতের সব নির্বাচনের থেকে আসন্ন নির্বাচন কঠিন হবে বলে মনে করছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাই দেশের মানুষের মন জয় করতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রতি কঠিন নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন বারংবার।
বিএনপি-র নাম ভাঙ্গিয়ে যারা সন্ত্রাস দখলদারিত্ব চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বারবার হুঁশিয়ারি দিয়ে চলছেন তারেক রহমান, এ পর্যন্ত অনেকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নিতে দেখা গেছে তারেক রহমান কে। রাজধানী সহ সারা বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নমনীয়তায় ভয়াবহ ভাবে বেড়ে গেছে চাঁদাবাজি দখল বাজি লুটতরাজ। সন্ত্রাস চাঁদাবাজ দখলদাররা নিজের রূপ পাল্টে দল পাল্টে আবার সক্রিয় হয়ে পড়েছে। তালিকাধারি সন্ত্রাসীরা অবস্থান করছে যার যার এলাকায়, গড়ে তুলছে কিশোর গ্যাং, তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে মাদক ও অস্ত্র, যার ফলশ্রুতিতে প্রতিদিনই ঘটছে হতাহতের ঘটনা। কিছু কিছু পুরানো সন্ত্রাসীরা নতুন রূপে আবির্ভূত হয়েছে। দিন দিন দল ভারি করে স্থানীয় সকল ব্যবসা-বাণিজ্যে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের কালো থাবা বসিয়েছে। এদের বেশির ভাগই দেশের জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র সুনাম নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
বিএনপি নেতার তকমা লাগিয়ে তারা মেতে উঠেছে সরকারি ভূমি দখল, পতিত সম্পত্তি দখল, বাজার, বাসস্ট্যান্ড, হাট, ঘাট, ডিস, ইন্টারনেট, সহ নানান লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলে। বিনা পুঁজির লাভজনক ব্যবসা, মাদক ব্যাবসা, স্থানীয় স্থাপনা দখল করে অস্থায়ী বাজার ও গ্যারেজ স্থাপন ও টেন্ডারবাজিতে আধিপত্য গড়তে জড়িয়ে পড়ছে গ্যাং ওয়্যারে। সামনে নির্বাচনকে সামনে রেখে দলভারি করতে রাজনৈতিক নেতারাও এদের ছত্রছায়া দিচ্ছে। বেড়ে যাওয়া সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন কে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করছে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা। পালিয়ে যাওয়া প্রেতাত্নারা সেসব সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ডকে জাতীয় ইস্যু হিসেবে বিশ্বমঞ্চে মঞ্চায়ন করছে। যাতে বর্তমান সরকার ও দেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। বিগত দেড় যুগের অপশাসনের অবসান হয়েছে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। দমন পীড়ন মিথ্যা মামলা, গুম খুনের দানবীয় রাষ্ট্রের পরিবর্তে মানবিক রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয়ে যাত্রা শুরু করে ছাত্র জনতা।
সন্ত্রাস চাঁদাবাজি দুর্নীতি অনিয়মের কারণে বিগত সময়ে নিষ্পেষিত সাধারণ জনতা সপরিবারের রাজপথে নেমে আসে, স্বৈরাচারের লাগাম টেনে ধরতে বৈষম্য বিরোধী সাধারণ ছাত্রদের নেতৃত্বে যাত্রা করে গণভবন ও সংসদ ভবনের পথে। নির্যাতিত নিষ্পেষিত জনতার বাঁধভাঙ্গা জোয়ার স্পর্শ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রত্যেকটি সদস্যের হৃদয়ে। সেনাবাহিনী অবস্থান নেয় দেশের মুক্তিকামী জনতার পক্ষে। পতন হয় দাম্ভিক স্বৈরাচারী সরকারের। স্বৈরাচারের পদলেহনকারী কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা পরিচালনা করে বিপাকে রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের অসংখ্য সদস্য। দেশের প্রত্যেকটি থানায় ছড়িয়ে পড়েছে স্থবিরতা ও মৌনতা। ভেঙ্গে পড়েছে পুলিশের মনোবল, আর সেই সুযোগে সক্রিয় হচ্ছে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড। শীর্ষ সন্ত্রাসীরা ইতোমধ্যে নিজেদের জাহির করতে মহানগরের অলিগলিতে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণকারীদের একত্রিত করছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার চিহ্নিত অপরাধীদের নিয়ে অরাজকতা তৈরি করার নীলনকশা কষছে। কারাগারে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে নির্দেশনা দিচ্ছে। এদের অনেকে রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত রয়েছে। সন্ত্রাসীদের পরিচয় কেবলই সন্ত্রাসী, এই সন্ত্রাসীরাই বিভিন্ন রাজনৈতিক গডফাদারের হাত ধরে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির মুখোশ পরে বিগত সময়ে জনগণের উপর নির্যাতনের খরগ চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের পতনের পর সেই সব ছিচকে সন্ত্রাসী চাঁদাবাদ গোষ্ঠীরা বিএনপি জামাতের রুপ ধারনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে, মহড়া দিচ্ছে পাড়া মহল্লায়। লুটপাট দখলদারিত্বের মাধ্যমের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে মরিয়া এসব সন্ত্রাসীরা। রাজনৈতিক পালাবদলের সুযোগে অস্ত্রধারী চাঁদাবাজী ও খুনের আসামীরাা বড্ড বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের থানা ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতার তকমা লাগিয়ে সংগঠিত হচ্ছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। দীর্ঘদিন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে থাকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ত্যাগী কর্মীরাও নির্যাতিত হচ্ছে সেসব হঠাৎ রাজনীতিবীদ বনে যাওয়া সন্ত্রাসীদের। এসব সুযোগ সন্ধানীদের বিরুদ্ধে বারবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এসব তথ্য পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দীর্ঘদিন আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন অপরাধী ভারত, মালয়েশিয়া, দুবাই, ইতালি, কানাডা, লন্ডন, ফ্রান্স, আমেরিকাসহ নানা দেশে আত্মগোপন করে আছে। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তারা নিজ নিজ খাঁটি তৈরি করেছে। বিগত ১৬ বছরের স্বৈরাশাসকের পতনের পর ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠেছে রাষ্ট্রের সকল বিভাগ । চলছে বিভিন্ন দেশে থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের শো-ডাউন কর্মসূচি। রাজধানী ঢাকায় আধিপত্য ধরে রাখতে তারা বেশ তৎপর।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় রাজধানীর চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সক্রিয় হচ্ছে বিএনপির মিছিল-মিটিংয়ে। যাদের নামে রয়েছে হত্যা চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ডজন ডজন মামলা, তারাই নাকি এলাকার বিচার সালিশ করে বেড়াচ্ছে। তাদের কেউ কেউ সামাজিক কর্মকাণ্ডের নামে গর্ত থেকে বেরিয়ে আসছে। তাদের জন্য স্থানীয় নেতাদের পক্ষ থেকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টাও করছে। পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অবৈধ আয়ের উৎস দখলে ব্যতিব্যস্ত তারা। লুট হয়ে যাওয়া অস্ত্রের ব্যাবহার নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। রাজধানীর প্রত্যন্ত এলাকায় চলছে কঠোর নজরদারি।
অন্যদিকে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা অনেকেই প্রকাশ্যে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তারা নির্বাচনের আগে পরিকল্পনামাফিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে চলছে। দেশ থেকে বিএনপিকে বিচ্ছিন্ন করতে তাদের এসব আপতৎপরতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে হাঁটছে তারেক রহমান। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বারবার হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন সে সকল স্থানীয় তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের যারা বিএনপির নাম ব্যবহার করে শক্তি প্রদর্শনের ব্যস্ত হয়ে আছেন। গত ৩ ডিসেম্বর এক ভিডিও কনফারেন্সে তারেক রহমান বারবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আমি বারবার বলছি – তারপরও যদি আপনারা অগ্রাহ্য করেন, তাহলে দেশের মানুষ আপনাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, বিগত নির্বাচন গুলোর থেকে আগামী নির্বাচন অনেক কঠিন হবে, তাই আপনাদের আচরণে জনসাধারণ যেন বিক্ষুদ্ধ না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন ”
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিনপির উচ্চ পদস্থ নেতৃবৃন্দরা বারবার সম্মিলিতভাবে মতবিনিময় করছেন। অপরাধ দমনে বিএনপিতে তৈরি করেছেন পর্যবেক্ষণ সেল, অভিযুক্তদের ব্যাপারে প্রতিদিনই চলছে সাংগঠনিক ব্যবস্থা। তাছাড়া যৌথবাহিনির সূত্রে জানা যায় থানা পুলিশ ও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দার বিভিন্ন ইউনিট এদের তালিকা হাতে নিয়েছে, তালিকা অনুযায়ী তাদের অপতৎপরতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যেকোনো সময় সাড়াষি অভিযানের মাধ্যমে সন্ত্রাস চাঁদাবাজ মুক্ত করা হবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়