ঢাকা ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

থেমে যাইনি, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি: প্রভা

বিনোদন ডেস্ক
  • Update Time : ১১:২৩:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ২৮৯ Time View

সংগৃহীত ছবি

ছোটপর্দার অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা ২০০৬ সালে মডেলিংয়ের মাধ্যমে বিনোদন জগতে পা রাখেন। ইফতেখার আহমেদ ফাহমি পরিচালিত ‘লস প্রজেক্ট’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয়ে যাত্রা শুরু করেন। এরপর অসংখ্য নাটক ও বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়েছেন প্রভা। তবে দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে দেখা যায়নি বড়পর্দায়। অবশেষে দুই দশকের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো নাম লেখাতে যাচ্ছেন বড়পর্দায়। সরকারি অনুদানের দুই সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন প্রভা।

একটি হচ্ছে ঝুমুর আসমা জুঁই পরিচালিত ‘দুই পয়সার মানুষ’। অন্যটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত সাদেক সিদ্দিকীর ‘দেনা পাওনা’।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে এ দুটি সিনেমায় কাজ ও সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন অভিনেত্রী।

প্রথমবার সিনেমায় নিশ্চয়ই উপভোগ করছেন?—এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রভা বলেন, সে কি আর বলতে! এই প্রথম নায়িকা নায়িকা একটা ফিল পাচ্ছি (হা হা হা)। কেউ মাথার ওপর ছাতা ধরছেন, আবার কেউ ডাব কেটে আনছেন। একটু পর পর পরিচালক এসে জিজ্ঞেস করছেন, কিছু লাগবে কিনা!

তিনি বলেন, সত্যি বলতে— নাটক-বিজ্ঞাপনের ইউনিট তো সিনেমার মতো এত বড় হয় না। ‘দুই পয়সার মানুষ’ সিনেমার নির্মাতা একজন নারী—ঝুমুর আসমা জুঁই। তিনি আমাকে শুটিং সেটে খুব সমাদর করেন।

অভিনেত্রী বলেন, আমিও তার ব্যবহারে দারুণ আপ্লুত। ‘দেনা পাওনা’ সিনেমার নির্মাতা প্রবীণ সাদেক সিদ্দিকী। তিনিও আমাকে যথেষ্ট আদর করেন। বলতে পারেন— সিনেমা করতে গিয়ে আলাদা অভিজ্ঞতা হচ্ছে।

এর আগে সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পাওয়া প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, আমার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল অল্প বয়সে। বাসা থেকে চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে দিতে রাজি হয়নি। এখন বুঝি, অনেকটা দেরি করে ফেলেছি। নিজে যখন সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করলাম, তখন আর ভালো গল্প বা প্রস্তাব পাইনি।

তিনি বলেন, একটা সময় নির্মাতারা আমার প্রতি যে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন, সেটার সুবিধা আমি নিতে পারিনি। আমার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চলচ্চিত্র নির্মাণও তো কমতে শুরু করল। এখন তো তলানিতে ঠেকেছে। তার পরও শুরু করলাম, দেখা যাক কত দূর যেতে পারি।

এ দুটি সিনেমায় আপনি কেমন চরিত্রে অভিনয় করছেন? উত্তরে প্রভা বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘দেনা পাওনা’র গল্প তো অনেকেই জানেন। এখানে আমি গরিব ঘরের মেয়ে। বাবা শখ করে বড়লোক পরিবারে বিয়ে দেন। কিন্তু বিয়ের সময় যৌতুক দিতে ব্যর্থ হন। সেটার দায় শ্বশুরবাড়িতে আমাকেই বহন করতে হয়।

তিনি বলেন, মানসিক নির্যাতনের শিকার হই। অন্যদিকে ‘দুই পয়সার মানুষ’-এ আমি মফস্বলের মেয়ে। বাবা স্কুলশিক্ষক। আমাকে আইন বিষয়ে পড়ান। একটা সময় জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।

ক্যারিয়ারের দুই দশক প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, আমি আসলে স্টারডম দেখাতে পারি না। এটাকে আমার ব্যর্থতা বা সফলতা দুটিই বলতে পারেন। এইচএসসি পরীক্ষার শেষ দিন গিয়েছিলাম মেরিল বিউটি সোপের অডিশনে। পাস করলাম, বিজ্ঞাপনচিত্র তৈরি হলো, রাতারাতি জনপ্রিয়ও হয়ে গেলাম। সারা দেশে আমার পরিচিতি এলো। অথচ আমি যে প্রভা সেই প্রভাই রয়ে গেলাম।

তিনি বলেন, শুটিং ইউনিটে কাউকে বুঝে কষ্ট দিয়েছি এমন অপবাদ নেই। কারও শিডিউল ফাঁসানোর রেকর্ডও নেই। অনেক ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অনেক ক্ষেত্রে ভুল করেছি। তবে থেমে যাইনি, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছি। বুকে ব্যথা লুকিয়ে মুখে হাসি রেখেছি। এই ইন্ডাস্ট্রি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। কৃতজ্ঞ থাকব সারা জীবন।

সামাজিক মাধ্যমে অনেকে আপনার ছবি- ভিডিও হীন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে প্রসঙ্গে প্রভা বলেন, হ্যাঁ। আগে মন খারাপ হতো, কাঁদতামও। তিনি বলেন, আমাদের দেশটা যদি ইউরোপ-আমেরিকার মতো হতো, তাহলে তো আর মানুষের চিন্তা-চেতনা এমন হতো না।

অভিনেত্রী বলেন, মাঝে মাঝে ভাবি— আমাকে যদি কেউ আইনি সহযোগিতা করতেন তাহলে ছবি ও ভিডিও ব্যবহারের বিরুদ্ধে মামলা করতাম। তিনি বলেন, কিছু দিন আগে দেখেছেন মনে হয়, ভারতে ঐশ্বরিয়া রাই কিন্তু মামলা করেছিলেন। সেই মামলা জিতেছেনও। এখন থেকে তার অনুমতি ছাড়া কেউ ছবি ব্যবহার করতে পারবে না। আমাদের দেশেও এমন আইন করার কথা জানান অভিনেত্রী প্রভা।

 

Please Share This Post in Your Social Media

থেমে যাইনি, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি: প্রভা

বিনোদন ডেস্ক
Update Time : ১১:২৩:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছোটপর্দার অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা ২০০৬ সালে মডেলিংয়ের মাধ্যমে বিনোদন জগতে পা রাখেন। ইফতেখার আহমেদ ফাহমি পরিচালিত ‘লস প্রজেক্ট’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয়ে যাত্রা শুরু করেন। এরপর অসংখ্য নাটক ও বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়েছেন প্রভা। তবে দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে দেখা যায়নি বড়পর্দায়। অবশেষে দুই দশকের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো নাম লেখাতে যাচ্ছেন বড়পর্দায়। সরকারি অনুদানের দুই সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন প্রভা।

একটি হচ্ছে ঝুমুর আসমা জুঁই পরিচালিত ‘দুই পয়সার মানুষ’। অন্যটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত সাদেক সিদ্দিকীর ‘দেনা পাওনা’।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে এ দুটি সিনেমায় কাজ ও সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন অভিনেত্রী।

প্রথমবার সিনেমায় নিশ্চয়ই উপভোগ করছেন?—এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রভা বলেন, সে কি আর বলতে! এই প্রথম নায়িকা নায়িকা একটা ফিল পাচ্ছি (হা হা হা)। কেউ মাথার ওপর ছাতা ধরছেন, আবার কেউ ডাব কেটে আনছেন। একটু পর পর পরিচালক এসে জিজ্ঞেস করছেন, কিছু লাগবে কিনা!

তিনি বলেন, সত্যি বলতে— নাটক-বিজ্ঞাপনের ইউনিট তো সিনেমার মতো এত বড় হয় না। ‘দুই পয়সার মানুষ’ সিনেমার নির্মাতা একজন নারী—ঝুমুর আসমা জুঁই। তিনি আমাকে শুটিং সেটে খুব সমাদর করেন।

অভিনেত্রী বলেন, আমিও তার ব্যবহারে দারুণ আপ্লুত। ‘দেনা পাওনা’ সিনেমার নির্মাতা প্রবীণ সাদেক সিদ্দিকী। তিনিও আমাকে যথেষ্ট আদর করেন। বলতে পারেন— সিনেমা করতে গিয়ে আলাদা অভিজ্ঞতা হচ্ছে।

এর আগে সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পাওয়া প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, আমার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল অল্প বয়সে। বাসা থেকে চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে দিতে রাজি হয়নি। এখন বুঝি, অনেকটা দেরি করে ফেলেছি। নিজে যখন সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করলাম, তখন আর ভালো গল্প বা প্রস্তাব পাইনি।

তিনি বলেন, একটা সময় নির্মাতারা আমার প্রতি যে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন, সেটার সুবিধা আমি নিতে পারিনি। আমার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চলচ্চিত্র নির্মাণও তো কমতে শুরু করল। এখন তো তলানিতে ঠেকেছে। তার পরও শুরু করলাম, দেখা যাক কত দূর যেতে পারি।

এ দুটি সিনেমায় আপনি কেমন চরিত্রে অভিনয় করছেন? উত্তরে প্রভা বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘দেনা পাওনা’র গল্প তো অনেকেই জানেন। এখানে আমি গরিব ঘরের মেয়ে। বাবা শখ করে বড়লোক পরিবারে বিয়ে দেন। কিন্তু বিয়ের সময় যৌতুক দিতে ব্যর্থ হন। সেটার দায় শ্বশুরবাড়িতে আমাকেই বহন করতে হয়।

তিনি বলেন, মানসিক নির্যাতনের শিকার হই। অন্যদিকে ‘দুই পয়সার মানুষ’-এ আমি মফস্বলের মেয়ে। বাবা স্কুলশিক্ষক। আমাকে আইন বিষয়ে পড়ান। একটা সময় জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।

ক্যারিয়ারের দুই দশক প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, আমি আসলে স্টারডম দেখাতে পারি না। এটাকে আমার ব্যর্থতা বা সফলতা দুটিই বলতে পারেন। এইচএসসি পরীক্ষার শেষ দিন গিয়েছিলাম মেরিল বিউটি সোপের অডিশনে। পাস করলাম, বিজ্ঞাপনচিত্র তৈরি হলো, রাতারাতি জনপ্রিয়ও হয়ে গেলাম। সারা দেশে আমার পরিচিতি এলো। অথচ আমি যে প্রভা সেই প্রভাই রয়ে গেলাম।

তিনি বলেন, শুটিং ইউনিটে কাউকে বুঝে কষ্ট দিয়েছি এমন অপবাদ নেই। কারও শিডিউল ফাঁসানোর রেকর্ডও নেই। অনেক ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অনেক ক্ষেত্রে ভুল করেছি। তবে থেমে যাইনি, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছি। বুকে ব্যথা লুকিয়ে মুখে হাসি রেখেছি। এই ইন্ডাস্ট্রি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। কৃতজ্ঞ থাকব সারা জীবন।

সামাজিক মাধ্যমে অনেকে আপনার ছবি- ভিডিও হীন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে প্রসঙ্গে প্রভা বলেন, হ্যাঁ। আগে মন খারাপ হতো, কাঁদতামও। তিনি বলেন, আমাদের দেশটা যদি ইউরোপ-আমেরিকার মতো হতো, তাহলে তো আর মানুষের চিন্তা-চেতনা এমন হতো না।

অভিনেত্রী বলেন, মাঝে মাঝে ভাবি— আমাকে যদি কেউ আইনি সহযোগিতা করতেন তাহলে ছবি ও ভিডিও ব্যবহারের বিরুদ্ধে মামলা করতাম। তিনি বলেন, কিছু দিন আগে দেখেছেন মনে হয়, ভারতে ঐশ্বরিয়া রাই কিন্তু মামলা করেছিলেন। সেই মামলা জিতেছেনও। এখন থেকে তার অনুমতি ছাড়া কেউ ছবি ব্যবহার করতে পারবে না। আমাদের দেশেও এমন আইন করার কথা জানান অভিনেত্রী প্রভা।