ঢাকা ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে, বাড়ছে নদীভাঙন

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব‌্যু‌রো
  • Update Time : ০৬:৫১:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪
  • / ২৯৯ Time View

রংপুরে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করছে। দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাতের সা‌থে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে রংপুরের তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে গতকাল বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে থাকা পানি আজ ৪ সেন্টিমিটার কমে এসেছে।

পা‌নি কমলেও নদীপাড়ের মানুষকে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি মেনে নি‌তে হচ্ছে প্রতি‌নিয়ত। বন্যায় রাস্তাঘাট ও বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় নদীপাড়ের মানুষ শঙ্কায় আছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবীব জানান, তিস্তা নদীর পানি ধী‌রে ধী‌রে কমতে শুরু করেছে।

রংপুরের দুই উপজেলা কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়ার ১০ গ্রামে পানি ঢুকে পড়ছে। এতে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েছে ঐ এলাকার সাধারন মানুষ। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় কিছু কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। তবে ভাঙন রোধের চেষ্টা চলছে। স্থানীয়দের দাবি অ‌চিরেই বেড়িবাঁধ নির্মান করা হোক।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং সকাল ৯টায় ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। তলিয়ে গেছে পাঁচ গ্রামের আংশিক অংশ। ১০০ হেক্টর ফসলি জমি আবাদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবারও পানি বাড়ার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। অন্যদিকে বর্ষার শুরুতেই তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে তিস্তা নদীর তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষ বন্যার আশঙ্কা করছে। তবে গবাদি পশু, ঘর-বাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়ছে নদীপাড়ের হাজারো মানুষ। অনেকেই বন্যার আভাস পেয়ে গবাদি পশু ও ঘর-বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। নিজেরাও নিরাপদে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গদাই গ্রাম, পাঞ্চরভাঙ্গা, হরিশর গ্রাম, আরাধি হরিশর গ্রামে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। স্থানীয়দের বাড়ছে ভোগান্তি। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। অনেকে আবার বাঁশ কেটে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন।

স্থানীয়দের ভাষ‌্যমতে, পানি কমলেও ভেঙে যাচ্ছে বাড়ি-ঘর, প্রচুর ক্ষতি হয়েছে ফসলের। রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তাদের। সরকারিভাবে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি এখ‌নো ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি কিছুটা কমছে। যা এখন বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজ পয়েন্টের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ডালিয়া পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করেছে। যার কারণে ভাটি অঞ্চলে নদীপাড়ের মানুষের সমস্যা হচ্ছে।

রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, বৃষ্টির ফলে অনেক স্থানে পানি উঠেছে। গঙ্গাচড়া এবং কাউনিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খোঁজখবর নেওয়ার। অতি দ্রুত তাদের কাছে সরকারিভাবে সহযোগিতা ও সাহায্য দেওয়া হবে। আর ভাঙন রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে, বাড়ছে নদীভাঙন

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব‌্যু‌রো
Update Time : ০৬:৫১:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪

রংপুরে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করছে। দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাতের সা‌থে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে রংপুরের তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে গতকাল বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে থাকা পানি আজ ৪ সেন্টিমিটার কমে এসেছে।

পা‌নি কমলেও নদীপাড়ের মানুষকে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি মেনে নি‌তে হচ্ছে প্রতি‌নিয়ত। বন্যায় রাস্তাঘাট ও বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় নদীপাড়ের মানুষ শঙ্কায় আছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবীব জানান, তিস্তা নদীর পানি ধী‌রে ধী‌রে কমতে শুরু করেছে।

রংপুরের দুই উপজেলা কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়ার ১০ গ্রামে পানি ঢুকে পড়ছে। এতে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েছে ঐ এলাকার সাধারন মানুষ। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় কিছু কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। তবে ভাঙন রোধের চেষ্টা চলছে। স্থানীয়দের দাবি অ‌চিরেই বেড়িবাঁধ নির্মান করা হোক।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং সকাল ৯টায় ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। তলিয়ে গেছে পাঁচ গ্রামের আংশিক অংশ। ১০০ হেক্টর ফসলি জমি আবাদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবারও পানি বাড়ার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। অন্যদিকে বর্ষার শুরুতেই তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে তিস্তা নদীর তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষ বন্যার আশঙ্কা করছে। তবে গবাদি পশু, ঘর-বাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়ছে নদীপাড়ের হাজারো মানুষ। অনেকেই বন্যার আভাস পেয়ে গবাদি পশু ও ঘর-বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। নিজেরাও নিরাপদে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গদাই গ্রাম, পাঞ্চরভাঙ্গা, হরিশর গ্রাম, আরাধি হরিশর গ্রামে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। স্থানীয়দের বাড়ছে ভোগান্তি। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। অনেকে আবার বাঁশ কেটে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন।

স্থানীয়দের ভাষ‌্যমতে, পানি কমলেও ভেঙে যাচ্ছে বাড়ি-ঘর, প্রচুর ক্ষতি হয়েছে ফসলের। রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তাদের। সরকারিভাবে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি এখ‌নো ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি কিছুটা কমছে। যা এখন বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজ পয়েন্টের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ডালিয়া পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করেছে। যার কারণে ভাটি অঞ্চলে নদীপাড়ের মানুষের সমস্যা হচ্ছে।

রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, বৃষ্টির ফলে অনেক স্থানে পানি উঠেছে। গঙ্গাচড়া এবং কাউনিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খোঁজখবর নেওয়ার। অতি দ্রুত তাদের কাছে সরকারিভাবে সহযোগিতা ও সাহায্য দেওয়া হবে। আর ভাঙন রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।