ঢাকা ০৬:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাবি ক্যাম্পাসের গাছে ঝুলন্ত লাশের পরিচয় মিলেছে

ঢাবি প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৩:০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ২৬ Time View

মৃত ব্যক্তির ছোট ভাই আবু রায়হান ছোটন বলেন, তাদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার নগরকসবা গ্রামে। তবে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ নয়বাড়ি এলাকায় তাদের নিজেদের বাড়ি আছে। চার ভাইয়ের মধ্যে সে ছিল সবার বড়। এলাকায় একটি টেইলার্সে কাজ করতো বড় ভাই আবু সালেহ। সেখান থেকেই বাজে বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে নেশা করা শুরু করে। গাজা, ইয়াবা সেবন করতো, শেষ পর্যন্ত প্যাথেডিন নেয়া শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, গত ২০ বছর যাবৎ নেশায় আসক্ত হয় তার বড় ভাই আবু সালেহ, তবে বাড়িতেই থাকতো। তিন বছর যাবৎ বাড়ি ছাড়া হয়ে বিভিন্ন জায়গায় থাকা শুরু করে। শেষ গত ৫ দিন আগে বাড়িতে গিয়েছিল। চিকিৎসার কথা বলে মা লুৎফুন্নেছার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নিয়ে ভোরে বের হয়ে যায়। আজ সকালে পুলিশের মাধ্যমে খবর পাই শাহবাগ এলাকায় তার ভাইয়ের মরদেহ পাওয়া গেছে। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে এসে মরদেহ সনাক্ত করি।

তিনি আরও বলেন, গত সাত থেকে আট বছর আগে নিজের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, এই বাড়িতে খারাপ জ্বিন আছে উল্লেখ করে। আবার এলাকার একটি গাছে দড়ি নিয়ে উঠে আত্মহত্যা করতে গিয়ে বলে মৃত মানুষরা তাকে ডাকছে।

এর আগে বুধবার (২২জানুয়ারী) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার একটি মেহগনি গাছ থেকে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় শাহবাগ থানা পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।

শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখ হাদিউজ্জামান জানান, সকাল পৌনে ৯টার দিকে তারা খবর পান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের বিপরীত পাশে ফুটপাতে একটি মেহগনি গাছের চূড়ায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে এক ব্যক্তি। সেখানে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের খবর দেয়া হয়। ফয়ার সার্ভিস আসলে তাদের সহায়তায় গাছ থেকে মরদেহটি নিচে নামানো হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

এসআই আরও জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে, ওই ব্যক্তি ভবঘুরে। থাকতেন ওই এলাকার ফুটপাতে। মানসিক সমস্যাও ছিল তার। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতের যে কোন সময় সে ওই মেহগনি গাছের চূড়ায় উঠে গলায় রশি পেচিয়ে ফাঁস দিয়েছেন।

এসআই আরও বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় সিআইডির ক্রাইমসিন হাতের আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত হয়। পরে তার পরিবারকে খবর দেয়া হয়। পরিবার থেকে জানা গেছে সে মাদকাসক্ত ও মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। পাঁচ বছর যাবৎ সে বাড়ির বাইরে থাকতো। ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

ঢাবি ক্যাম্পাসের গাছে ঝুলন্ত লাশের পরিচয় মিলেছে

ঢাবি প্রতিবেদক
Update Time : ০৩:০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

মৃত ব্যক্তির ছোট ভাই আবু রায়হান ছোটন বলেন, তাদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার নগরকসবা গ্রামে। তবে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ নয়বাড়ি এলাকায় তাদের নিজেদের বাড়ি আছে। চার ভাইয়ের মধ্যে সে ছিল সবার বড়। এলাকায় একটি টেইলার্সে কাজ করতো বড় ভাই আবু সালেহ। সেখান থেকেই বাজে বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে নেশা করা শুরু করে। গাজা, ইয়াবা সেবন করতো, শেষ পর্যন্ত প্যাথেডিন নেয়া শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, গত ২০ বছর যাবৎ নেশায় আসক্ত হয় তার বড় ভাই আবু সালেহ, তবে বাড়িতেই থাকতো। তিন বছর যাবৎ বাড়ি ছাড়া হয়ে বিভিন্ন জায়গায় থাকা শুরু করে। শেষ গত ৫ দিন আগে বাড়িতে গিয়েছিল। চিকিৎসার কথা বলে মা লুৎফুন্নেছার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নিয়ে ভোরে বের হয়ে যায়। আজ সকালে পুলিশের মাধ্যমে খবর পাই শাহবাগ এলাকায় তার ভাইয়ের মরদেহ পাওয়া গেছে। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে এসে মরদেহ সনাক্ত করি।

তিনি আরও বলেন, গত সাত থেকে আট বছর আগে নিজের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, এই বাড়িতে খারাপ জ্বিন আছে উল্লেখ করে। আবার এলাকার একটি গাছে দড়ি নিয়ে উঠে আত্মহত্যা করতে গিয়ে বলে মৃত মানুষরা তাকে ডাকছে।

এর আগে বুধবার (২২জানুয়ারী) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার একটি মেহগনি গাছ থেকে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় শাহবাগ থানা পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।

শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখ হাদিউজ্জামান জানান, সকাল পৌনে ৯টার দিকে তারা খবর পান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের বিপরীত পাশে ফুটপাতে একটি মেহগনি গাছের চূড়ায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে এক ব্যক্তি। সেখানে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের খবর দেয়া হয়। ফয়ার সার্ভিস আসলে তাদের সহায়তায় গাছ থেকে মরদেহটি নিচে নামানো হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

এসআই আরও জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে, ওই ব্যক্তি ভবঘুরে। থাকতেন ওই এলাকার ফুটপাতে। মানসিক সমস্যাও ছিল তার। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতের যে কোন সময় সে ওই মেহগনি গাছের চূড়ায় উঠে গলায় রশি পেচিয়ে ফাঁস দিয়েছেন।

এসআই আরও বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় সিআইডির ক্রাইমসিন হাতের আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত হয়। পরে তার পরিবারকে খবর দেয়া হয়। পরিবার থেকে জানা গেছে সে মাদকাসক্ত ও মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। পাঁচ বছর যাবৎ সে বাড়ির বাইরে থাকতো। ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।