ঢাকা ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
নির্বাচনের আগেই লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা গাজায় নারীদের জন্য নেতানিয়াহুর ‘মায়াকান্না’ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেসস্প্রিন্ট-২০২৫ প্রতিযোগিতা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ভিডিও বানানো ১২ তরুণের নামে মামলা ভারতে থাকা কোনো রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করা হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা টঙ্গীতে বেক্সিমকোর পাশের তুলার গোডাউনে ভয়াবহ আগুন সংবিধান পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত আগের পদ্ধতিতেই নির্বাচন হবে: সিইসি আগামী নির্বাচনে অস্ত্রের চেয়েও ভয়াবহ হুমকি এআই: সিইসি শ্রীপুরে বিএনপি নেতার বাড়ীতে ডাকাতি, নগদ টাকাসহ ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে বেশি করে বৃক্ষরোপণ করতে হবে – পরিবেশ উপদেষ্টা

ঢাকায় ‘ভুয়া সাংবাদিক’ চক্র: প্রেসকার্ড-ভেস্ট নিয়ে প্রতারণা, সাংবাদিকতা পেশা আজ প্রশ্নবিদ্ধ!

সাজিদ মাহমুদ ইফতি, ঢাকা
  • Update Time : ০৮:৪৬:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
  • / ১৭৫ Time View

ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে থানার গেট, আদালতের বারান্দা কিংবা ভিআইপি অনুষ্ঠান—সব জায়গাতেই দেখা মেলে একদল “সাংবাদিক” সেজে ঘোরাফেরা করা লোকের। কারও গলায় আইডি কার্ড, কারও গায়ে সাংবাদিক লেখা ভেস্ট, হাতে একটা পুরনো মাইক্রোফোন বা ক্যামেরা! কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, এদের অধিকাংশেরই কোনো গণমাধ্যমে চাকরি নেই, কেউ কেউ নিজেরাই ফেসবুক পেজ খুলে সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে।

তাদের কাজ কী?

ভুয়া সাংবাদিকদের একটি বড় অংশ থানায় গিয়ে ‘কাভারেজ’ করার নামে পুলিশকে ভয় দেখায়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অনিয়মের কথা বলে চাঁদা তোলে। আবার কেউ কেউ ভুয়া নিউজ বানিয়ে কাউকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করে।

ঢাকার মিরপুর, পল্টন, যাত্রাবাড়ী ও সদরঘাট এলাকায় এসব কর্মকাণ্ড বেশি দেখা যায়।

ভুয়া প্রেসকার্ড ও মাইক্রোফোন বানানো হয় কোথায়?

সূত্র জানায়, পুরান ঢাকার কিছু গলিতে মাত্র ৩০০-৫০০ টাকায় বানানো যায় ‘সাংবাদিক’ আইডি কার্ড। কেউ চাইলে তার নাম, ছবি ও ‘চিফ রিপোর্টার’ লিখেও বানিয়ে নিতে পারে। এমনকি অনেক রাজনৈতিক দলের কর্মীও নিজেদের ‘মিডিয়া পারসন’ পরিচয় দিয়ে সুবিধা নেয়।

পুলিশ কী বলছে?

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান:

“আমরা প্রায়ই দেখি কেউ একজন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থানায় আসে, কিন্তু যাচাই করলে দেখা যায় ওই নামের কেউই কোনো মিডিয়ায় নেই। এসব প্রতারকদের ধরতে সম্প্রতি তালিকা তৈরি শুরু করেছি।”

সত্যিকারের সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ

একজন জাতীয় দৈনিকের রিপোর্টার বলেন:

“ভুয়া সাংবাদিকদের কারণে পুলিশ, সাধারণ মানুষ এমনকি ভিআইপিরাও এখন আসল সাংবাদিকদের সন্দেহের চোখে দেখে। এটা আমাদের জন্য অপমানজনক।”

সমাধান কী?

১. প্রেস কাউন্সিল বা তথ্য মন্ত্রণালয়ের রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সাংবাদিকতা না করার নিয়ম চালু করা ২. থানা ও অফিসে সাংবাদিক পরিচয়ে আসলে আইডি যাচাই বাধ্যতামূলক করা 3. ফেসবুক/ইউটিউব ভিত্তিক ‘মিডিয়া’ পেজগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করা

শেষ কথা-

সাংবাদিকতা একটি গর্বের পেশা। কিছু অসাধু লোকের কারণে এ পেশার মর্যাদা হারাচ্ছে। এখনই সময়, এই ভুয়া সাংবাদিক চক্রের বিরুদ্ধে সামাজিক ও প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার।

সাংবাদিক ও সাংঘাতিকের গল্প

Please Share This Post in Your Social Media

ঢাকায় ‘ভুয়া সাংবাদিক’ চক্র: প্রেসকার্ড-ভেস্ট নিয়ে প্রতারণা, সাংবাদিকতা পেশা আজ প্রশ্নবিদ্ধ!

সাজিদ মাহমুদ ইফতি, ঢাকা
Update Time : ০৮:৪৬:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে থানার গেট, আদালতের বারান্দা কিংবা ভিআইপি অনুষ্ঠান—সব জায়গাতেই দেখা মেলে একদল “সাংবাদিক” সেজে ঘোরাফেরা করা লোকের। কারও গলায় আইডি কার্ড, কারও গায়ে সাংবাদিক লেখা ভেস্ট, হাতে একটা পুরনো মাইক্রোফোন বা ক্যামেরা! কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, এদের অধিকাংশেরই কোনো গণমাধ্যমে চাকরি নেই, কেউ কেউ নিজেরাই ফেসবুক পেজ খুলে সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে।

তাদের কাজ কী?

ভুয়া সাংবাদিকদের একটি বড় অংশ থানায় গিয়ে ‘কাভারেজ’ করার নামে পুলিশকে ভয় দেখায়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অনিয়মের কথা বলে চাঁদা তোলে। আবার কেউ কেউ ভুয়া নিউজ বানিয়ে কাউকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করে।

ঢাকার মিরপুর, পল্টন, যাত্রাবাড়ী ও সদরঘাট এলাকায় এসব কর্মকাণ্ড বেশি দেখা যায়।

ভুয়া প্রেসকার্ড ও মাইক্রোফোন বানানো হয় কোথায়?

সূত্র জানায়, পুরান ঢাকার কিছু গলিতে মাত্র ৩০০-৫০০ টাকায় বানানো যায় ‘সাংবাদিক’ আইডি কার্ড। কেউ চাইলে তার নাম, ছবি ও ‘চিফ রিপোর্টার’ লিখেও বানিয়ে নিতে পারে। এমনকি অনেক রাজনৈতিক দলের কর্মীও নিজেদের ‘মিডিয়া পারসন’ পরিচয় দিয়ে সুবিধা নেয়।

পুলিশ কী বলছে?

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান:

“আমরা প্রায়ই দেখি কেউ একজন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থানায় আসে, কিন্তু যাচাই করলে দেখা যায় ওই নামের কেউই কোনো মিডিয়ায় নেই। এসব প্রতারকদের ধরতে সম্প্রতি তালিকা তৈরি শুরু করেছি।”

সত্যিকারের সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ

একজন জাতীয় দৈনিকের রিপোর্টার বলেন:

“ভুয়া সাংবাদিকদের কারণে পুলিশ, সাধারণ মানুষ এমনকি ভিআইপিরাও এখন আসল সাংবাদিকদের সন্দেহের চোখে দেখে। এটা আমাদের জন্য অপমানজনক।”

সমাধান কী?

১. প্রেস কাউন্সিল বা তথ্য মন্ত্রণালয়ের রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সাংবাদিকতা না করার নিয়ম চালু করা ২. থানা ও অফিসে সাংবাদিক পরিচয়ে আসলে আইডি যাচাই বাধ্যতামূলক করা 3. ফেসবুক/ইউটিউব ভিত্তিক ‘মিডিয়া’ পেজগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করা

শেষ কথা-

সাংবাদিকতা একটি গর্বের পেশা। কিছু অসাধু লোকের কারণে এ পেশার মর্যাদা হারাচ্ছে। এখনই সময়, এই ভুয়া সাংবাদিক চক্রের বিরুদ্ধে সামাজিক ও প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার।

সাংবাদিক ও সাংঘাতিকের গল্প