ঢাকা ০৫:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডলারের দর বৃদ্ধির প্রভাব রেমিট্যান্সে

নওরোজ অর্থনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ১০:০৪:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩
  • / ১৫২ Time View

দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্সের ডলার ক্রয়ে ব্যাংকগুলোকে স্বাধীনতা দেয় ব্যাংকের নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদা।

এরপরই রেমিট্যান্সে ১২৪ টাকা পর্যন্ত ডলার কেনা শুরু করে ব্যাংকগুলো। এতে দেশের প্রবাসী আয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা দিয়েছে।

নভেম্বরের প্রথম ১০ দিনে প্রবাসীরা বৈধ পথে ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৭৯ কোটি ৪৪ হাজার ডলার। দৈনিক আসছে ৭ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে রেমিট্যান্স ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১২ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি মাসের ১০ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে এরমধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪ কোটি ৯২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৭২ কোটি ৩২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের অক্টোব‌রে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে সেপ্টেম্বরে গত সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এসেছিল। আলোচ্য মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এ ছাড়া, সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ মার্কিন ডলার।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, ব্যাংকগুলো ডলার সংকটের কারণে আমদানির দেনা শোধ করতে পারছে না। তাই ডলারের সংকট মোকাবিলায় অনেক ব্যাংক বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে প্রবাসী আয় কিনতে হচ্ছে। এ সুযোগে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো হঠাৎ করে ১২ থেকে ১৪ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম। ফলে চলতি মাসের শুরুতে অনেক ব্যাংক বাধ্য হয়ে প্রতি ডলার ১২৩ থেকে ১২৪ টাকায় প্রবাসী আয় কিনেছে।

এমন অস্থির পরিস্থিতিতে ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ন্ত্রণে রেমিট্যান্সের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দর কোনোভাবেই ১১৬ টাকার বেশি দর দেওয়া যাবে না। ফলে চলতি মাসের বাকি দিনগুলোতে শুরুর সপ্তাহের মতো রেমিট্যান্স প্রবাহ না-ও হতে পারে।

সর্বশেষ ব্যাংকগুলোর ঘোষণা অনুযায়ী, প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনার ক্ষেত্রে ডলারের ঘোষিত দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আজকে আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন হচ্ছে ১১১ টাকা।

এদিকে, খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুণতে হচ্ছে ১২৬ থেকে ১২৭ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন তারা খোলা বাজার থেকে নগদ প্রতি ডলার কিনছে।

বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার। আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ হয়েছিল। যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

Please Share This Post in Your Social Media

ডলারের দর বৃদ্ধির প্রভাব রেমিট্যান্সে

নওরোজ অর্থনীতি ডেস্ক
Update Time : ১০:০৪:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩

দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্সের ডলার ক্রয়ে ব্যাংকগুলোকে স্বাধীনতা দেয় ব্যাংকের নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদা।

এরপরই রেমিট্যান্সে ১২৪ টাকা পর্যন্ত ডলার কেনা শুরু করে ব্যাংকগুলো। এতে দেশের প্রবাসী আয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা দিয়েছে।

নভেম্বরের প্রথম ১০ দিনে প্রবাসীরা বৈধ পথে ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৭৯ কোটি ৪৪ হাজার ডলার। দৈনিক আসছে ৭ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে রেমিট্যান্স ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১২ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি মাসের ১০ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে এরমধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪ কোটি ৯২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৭২ কোটি ৩২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের অক্টোব‌রে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে সেপ্টেম্বরে গত সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এসেছিল। আলোচ্য মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এ ছাড়া, সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ মার্কিন ডলার।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, ব্যাংকগুলো ডলার সংকটের কারণে আমদানির দেনা শোধ করতে পারছে না। তাই ডলারের সংকট মোকাবিলায় অনেক ব্যাংক বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে প্রবাসী আয় কিনতে হচ্ছে। এ সুযোগে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো হঠাৎ করে ১২ থেকে ১৪ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম। ফলে চলতি মাসের শুরুতে অনেক ব্যাংক বাধ্য হয়ে প্রতি ডলার ১২৩ থেকে ১২৪ টাকায় প্রবাসী আয় কিনেছে।

এমন অস্থির পরিস্থিতিতে ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ন্ত্রণে রেমিট্যান্সের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দর কোনোভাবেই ১১৬ টাকার বেশি দর দেওয়া যাবে না। ফলে চলতি মাসের বাকি দিনগুলোতে শুরুর সপ্তাহের মতো রেমিট্যান্স প্রবাহ না-ও হতে পারে।

সর্বশেষ ব্যাংকগুলোর ঘোষণা অনুযায়ী, প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনার ক্ষেত্রে ডলারের ঘোষিত দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আজকে আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন হচ্ছে ১১১ টাকা।

এদিকে, খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুণতে হচ্ছে ১২৬ থেকে ১২৭ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন তারা খোলা বাজার থেকে নগদ প্রতি ডলার কিনছে।

বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার। আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ হয়েছিল। যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।