ট্রাম্প-মোদীর বৈঠকে যেসব বিষয় প্রাধান্য পাবে

- Update Time : ০৫:৪৩:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৯৮ Time View
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে আসন্ন বৈঠকে বাণিজ্য, শুল্ক ও অভিবাসন সংক্রান্ত ইস্যুগুলো বিশেষ গুরুত্ব পাবে। মোদী এই সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেসময় তাদের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারত্বের পাশাপাশি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও নীতিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
ট্রাম্প ও মোদীর মধ্যে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক রয়েছে। ২০১৭ সালে তাদের প্রথম বৈঠক হয়। এরপর থেকে দুই নেতার সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে, যা ২০১৯ সালে হিউস্টন ও ২০২০ সালে আহমদাবাদে বিশাল জনসমাগমে যৌথ উপস্থিতির মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
তবে উভয় নেতার মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক থাকলেও এবারের সফরে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বেশ কিছু কঠিন বিষয় আলোচনায় আসবে। বিশেষ করে, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যে ভারসাম্য আনতে শুল্ক কমানোর দাবি জানাতে পারে।
বাণিজ্য ও শুল্ক: যুক্তরাষ্ট্রের দাবি
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলার। এ ঘাটতি কমানোর জন্য ট্রাম্প ভারতের আমদানি শুল্ক আরও কমানোর দাবি তুলতে পারেন। যদিও ভারত এর মধ্যেই কিছু শুল্ক কমিয়েছে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও ছাড় দেওয়ার জন্য চাপ আসতে পারে।
মোদীর পক্ষ থেকে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব আসতে পারে, যা উভয় দেশের জন্য শুল্ক কমানোর একটি সমন্বিত কাঠামো গড়ে তুলবে।
অভিবাসন: ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসন অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলায় কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। ফলে দুই নেতার আসন্ন বৈঠকে ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সাত লাখের বেশি অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী রয়েছে।
ভারত এরই মধ্যে ১০৪ জন অভিবাসীকে ফিরিয়ে নিয়েছে। তবে ট্রাম্প আরও ফেরত পাঠানোর দাবি তুলতে পারেন।
অন্যদিকে, প্রযুক্তি খাতে ভারতীয়দের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে মোদী এইচ-১বি ভিসা সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ জানাতে পারেন।
জ্বালানি ও প্রযুক্তি সহযোগিতা
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে জ্বালানি খাতেও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র চাইবে ভারত তাদের কাছ থেকে আরও বেশি তেল কিনুক। তবে ভারত রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল আমদানি করায় এই বিষয়ে আপসের প্রয়োজন হতে পারে।
এছাড়া, মোদী পারমাণবিক জ্বালানিতে বিনিয়োগের জন্য ট্রাম্পকে আহ্বান জানাতে পারেন। ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ভারত নতুন পারমাণবিক শক্তি প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে।
প্রযুক্তি সহযোগিতার ক্ষেত্রে, ‘ইনিশিয়েটিভ অন ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড এমার্জিং টেকনোলজিস’ (আইসিইটি) উদ্যোগের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত অংশীদারত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
আন্তর্জাতিক ইস্যু
বৈঠকে আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে। ভারতের ইরানের চাবাহার বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে কি না, তা স্পষ্ট করতে মোদী ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন।
এছাড়া, ইউক্রেন ও গাজার চলমান যুদ্ধের বিষয়ে মোদীর অবস্থান জানতে চাইতে পারেন ট্রাম্প। বিশেষ করে, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও ইসরায়েলের সঙ্গে কৌশলগত বন্ধুত্বের কারণে মোদীর মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সমন্বয়ে গঠিত ‘কোয়াড’ জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে। ট্রাম্পের প্রথম দফার শাসনামলে কোয়াডকে উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছিল এবং এই বছরের কোয়াড বৈঠকের আয়োজক ভারত ট্রাম্পকে এতে আমন্ত্রণ জানাতে পারে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়