টাস্কফোর্স আতঙ্কে সওজের দূর্নীতিবাজরা

- Update Time : ০৮:২০:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪
- / ১০৭ Time View
চলমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে পারে দুর্নীতি বিরোধী ট্রাস্কফোর্স, চারিদিকে এমনই শোরগোল শোনা যাচ্ছে। আর সেই টাস্কফোর্সের আতঙ্কে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের শতাধিক দুর্নীতি পরায়ণ প্রকৌশলীরা। বিগত ১৬ বছরে অনিয়ম দুর্নীতি করে যারা নিজেদের আখের গুছিয়েছেন, দেশে ২০০৭ এর দুর্নীতি বিরোধী সারাশি অভিযানের দুঃস্বপ্ন যেনো তাদের পিছু ছাড়ছে না। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সওজ, বাংলাদেশ সরকারের অবকাঠামগত উন্নয়নের অংশীদারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বরাবর প্রশংসিত হয়ে থাকে।
সওজ কর্মকর্তাদের নিরলস পরিশ্রম ও মেধা মননের মাধ্যমে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যতটুকু সাফল্য এনেছেন, তার চেয়ে বেশি মন্ত্রী আমলা প্রকৌশলী ঠিকাদারদের মিশেল দূর্নীতি অনিয়মে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বারবার। সরকার তথা জনগণের টাকা আত্মসাৎ করে কতিপয় কর্মকর্তারা গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের সাম্রাজ্য। সওজের বেশ কিছু সংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ অসাধু কর্মকর্তা দের নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ ও প্রমান এসেছে দৈনিক নওরোজ কর্তৃপক্ষের কাছে, ইতোমধ্যে মুন্সিগঞ্জ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের পূর্বে সাংবাদিকতার প্রতি সাংবিধানিক অধিকার সম্মতভাবে তার আয় বহির্ভূত সম্পদ ও অন্যান্য দুর্নীতি অনিয়ম সম্পর্কে সবিনয়ে জানতে চাওয়া হয়। এমন অনেক দুর্নীতি পরায়ন প্রকৌশলী রয়েছে যারা বিগত ১৬ বছরের বার বার মন্ত্রণালয়ের ও দুদকের তদন্ত সম্মুখীন হলে অদৃশ্য শক্তির বলে মুক্তি পেয়েছেন। সেই অদৃশ্য শক্তি নানান ভাবে বল প্রয়োগ করে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার উপর, আবার তারাই নিয়ন্ত্রণ করে দুর্নীতি দমন কমিশন অথবা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি। এর কারণ কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের থেকে মোটা অংকের পয়সা বাগিয়ে নেয় তারা, এবং ঠিকাদার সিন্ডিকেটদের নিয়ন্ত্রণ করে দেশ বিদেশে বসে। ভিন্ন সূত্রে জানা যায় অসাধু কর্মকর্তা ও কতিপয় অসাধু ঠিকাদারদের আত্মসাৎ করা অর্থ সেই অদৃশ্য শক্তির মাধ্যমেই বিদেশে পাচার হয়।
বিভিন্ন অনুসন্ধানে উঠে আসে সড়কের কিছু অসাধু কর্মকর্তা প্রকৌশলীদের ভাগিনা ভাতিজারাও বড় মাপের ঠিকাদার, মামা চাচার জোর খাটিয়ে বাগিয়ে নিচ্ছে টেন্ডার। সেসব মামা চাচারা হঠাৎই হয়ে উঠেছে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ, রাজধানীর উত্তরা গুলশান বারিধারা বসুন্ধরা ধানমন্ডি সহ বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় তাদের রয়েছে একাধিক অট্টালিকা ফ্লাট ও দামি দামি দৈত্যাকার গাড়ি। বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও টেলিভিশনে হর হামেশাই সওজের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারীদের দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হয়, অভিযোগ ও জমা পড়ে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় ও দুদকে। কিন্তু সেই অদৃশ্য শক্তি অভিযোগগুলো তদন্ত হতে দেয় না, তার বিনিময়ে সেসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের কাছ থেকে গুনে নেয় কোটি কোটি টাকা। এবং তারা সাংবাদিকদের সংবাদ বন্ধ করার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে থাকে। আর এতে সবাই কমবেশি বিশ্বাস করে থাকে, কারণ লোক মুখে প্রচলিত আছে সাংবাদিকদের নাকি টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করা যায়? তাইতো কোন সাংবাদিক অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করা হয়েছে বললেই সবাই এক কথায় বিশ্বাস করে ফেলে। গণমাধ্যম কর্মীরা দায়িত্ব অনুযায়ী একের পর এক সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশে ব্যস্ত থাকে আর সেই সুযোগেই পার পেয়ে যায় এই অসাধুচক্র। ঠিক তখনই সেই অদৃশ্য শক্তি বলে বেড় অমুক সাংবাদিক কে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছি, দুদকের অমুক অফিসার কে ম্যানেজ করেছি, যা সত্যের অপোলাপ মাত্র। কাজের চাপে যখন দুদক কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও গণমাধ্যম ব্যস্ত সময় কাটায় ঠিক তখনই সুযোগ নেয় লুটেরাদের রক্ষক সেই অদৃশ্য শক্তি।
দূর্নীতি পরায়নদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত না হওয়ায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে চলছে বিচারহীনতার সংস্কৃতি। এতেই দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে সওজের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা। যার সুযোগ নিচ্ছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো। আর তাদের রক্ষা করে চলছে সেই অদৃশ্য শক্তি, তাদের বিভিন্ন সময় গণমাধ্যম কর্মীদের মারধর করা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়ার ও রেকর্ড রয়েছে। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরে বিচারহীনতার সংস্কৃতি কায়েম রাখতে এমন কোন কাজ নেই যে তারা করতে পারে না। লোক চক্ষুর আড়ালে থাকা সেই অদৃশ্য শক্তি দুর্নীতিবাজদের করছে আরও উৎসাহিত । কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় গঠিত হতে পারে দুর্নীতি বিরোধী ট্রাস্ক ফোর্স, যার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে চারিপাশে। সেই আতঙ্কেই নাকি ঘুম হারাম সড়কের শতাধিক দুর্নীতি পরায়ন প্রকৌশলীর। পর্দার অন্তরালে থাকা সেই অদৃশ্য অশুভ শক্তির মুখোশ উন্মোচন করতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দৈনিক নওরোজ, যার আরো বিস্তারিত থাকবে পরবর্তী প্রতিবেদনে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়