ঢাকা ১২:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ফেসবুকের মাধ্যমে ভিকটিমের পরিচয় সনাক্ত করে অটোরিক্সা ছিনতাই মামলার রহস্য উদঘাটন

জুয়া ও নেশার টাকার জন্য গলা কেটে হত্যা করা হয় অটো চালক রবিউলকে

নরসিংদী প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৫:২৫:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪
  • / ৬৪ Time View

অনলাইন জুয়া ও নেশার টাকা যোগানের উদ্দেশ্যে ভিকটিম রবিউল ইসলামকে গলা কেটে হত্যা করে অটো ছিনতাই মামলার রহস্য উৎঘাটন করেছে পিবিআই নরসিংদী জেলা। ঘটনার সাথে জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাইকৃত অটোরিক্সা এবং হত্যার ব্যবহৃত চাপাতি।

গত ২৯/১০/২০২৩ ইং তারিখ সকালে জানা যায় যে, নরসিংদী জেলার শিবপুর থানা এলাকার সাতপাইকা পাঁকা রাস্তার পাশে জনৈক নয়ন মিয়ার ধানক্ষেতে একটি অজ্ঞাতনামা কিশোরের জবাই করা লাশ পড়ে আছে। সংবাদ পেয়ে পিবিআই নরসিংদী জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) জনাব মোঃ এনায়েত হোসেন মান্নান সহ পিবিআই নরসিংদী জেলার ক্রাইমসীন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সরেজমিনে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

পিবিআই নরসিংদী জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) জনাব মোঃ এনায়েত হোসেন মান্নান মহোদয়ের প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনায় নরসিংদী জেলার ক্রাইমসীন টিম তথ্যপ্রযুক্তি ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ভিকটিমের পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরবতীর্তে ভিকটিম রবিউল ইসলামের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে নরসিংদীর শিবপুর থানার মামলা নং—২৩, তারিখঃ ৩০/১০/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা—৩০২/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন। বর্তমান সময়ে প্রায়শই গাড়ি/অটোরিক্সা ছিনতাই করতঃ চালককে হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটছে। যা অত্যান্ত দুঃখজনক। জনস্বার্থ ও গুরুত্বের বিবেচনায় মামলাটি পিবিআই নরসিংদী স্ব—উদ্যেগে গ্রহণ করে।

মামলার ঘটনার তদন্তে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নিঃ) সাদেকুল সিকদার সহ পিবিআই নরসিংদীর একাধিক চৌকস টিম নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ সহ ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে। ঘটনার কোন ক্লু না থাকায় শিবপুর অঞ্চলে যাদের চোরাই অটো বাইক/গাড়ি চোরাই ক্রয়বিক্রয়ে দুর্নাম ও জনশ্রম্নতি রয়েছে যাচাই করতঃ সন্দিগ্ধ আসামী রাকিবুল(২০) কে গ্রেফতার করা করি। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে উক্ত আসামী ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অটোরিক্সাটি নাহিদের মাধ্যমে বিক্রয়ে সহায়তা করেছে বলে জানায়। কিন্তু হত্যার বিষয়ে কোন কথা স্বীকার করেনি। তারই দেওয়া তথ্যমতে সন্দিগ্ধ আসামী— ২। মোঃ নাহিদ শেখ(২২) কে গ্রেফতার করা হয়। আসামী নাহিদ অটোরিক্সাটি বিক্রয়ের কথা স্বীকার করে এবং যে গ্যারেজে বেঁচাকেনা হয়েছিল তা দূর থেকে সনাক্ত করে। এছাড়া আমাদের নিয়োগকৃত সোর্স শিবপুর কলেজ গেইট এলাকায় এধরনের একটি অটোগাড়ি দেখেছে বলে জানালে আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে ঐ সকল এলাকায় একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করতঃ অটো চালককে সনাক্ত করতঃ আসামী—৩। মোঃ হুমায়ুন(৪০) কে গ্রেফতার করি। তার দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকান্ডের পরে ছিনতাইকৃত অটোরিক্সাটি গ্যারেজ মালিক আসামী—৪। মোঃ লিটন খাঁন(৪৫) এর গ্যারেজ হতে উদ্ধার করা হয়। জানা যায় যে, গাড়িটি যাতে কেউ চিনতে না পারে তাই গাড়ির রং ও কিছু পার্টস পরিবর্তন করে নতুন রুপদান করে এবং গ্যারেজ মালিক আসামী মোঃ লিটন খাঁন উক্ত অটোরিক্সাটি ৩০ হাজার টাকায় ক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করে। পরবতীর্তে নাহিদকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করায় যারা নাহিদের কাছে ছিনতাইকৃত অটোরিক্সাটি নিয়ে আসছিল তাদের নাম প্রকাশ করে। হত্যার সাথে জড়িত উক্ত আসামীগন ঘটনার পরক্ষনেই গাঁ ঢাকা দেওয়ায় অনেক সময় ধর্য্য নিয়ে অভিযান করা হয় এবং ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকারী দুইজন সহ গাড়ি ক্রয় বিক্রয়, রং ও মডেল পরিবর্তন ও সংরক্ষণের সংশ্লিষ্ট ০৫(পাঁচ) জন আসামী নিজেদের সম্পৃক্ত করে কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করে।

তাদের দেওয়া তথ্যমতে জানা যায় যে, ভিকটিম রবিউল হত্যকান্ড ও অটোরিক্সা ছিনতাইয়ে প্রত্যেক্ষভাবে জড়িত আসামী— অমি, নিহাল, হাসিবগন একই সাথে চলাফেরা করতো। তারা অনলাইনে জুয়া খেলতো ও নিয়মিত মাদক সেবন করতো। একপর্যায়ে আসামীরা জুয়া ও মাদক সেবনের টাকা উপার্জনের উদ্দেশ্যে ভিকটিম রবিউল ইসলামকে হত্যা করে তার সাথে থাকা অটোরিক্সাটি ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ি মামলার ঘটনার তারিখ বিকাল অনুমান ০২.০০ ঘটিকার দিকে আসামী— অমি, নিহাল, হাসিবগন শিবপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ভিকটিম রবিউল ইসলামকে পেয়ে ভিকটিমকে তার অটোরিক্সা নিয়ে বিকাল ৪.০০ ঘটিকার দিকে আসামী শাজিদুল ইসলাম হাসিব এর বাড়ীর সামনে থাকতে বলে। আসামী— ১। অমি ও ২। নিহালদ্বয় বিকাল ৪.০০ ঘটিকার পূর্বেই অপর আসামী হাসিরের বাড়ীর সামনে উপস্থিত হয়। ভিকটিম রবিউল ইসলাম বিকাল ৪.০০ ঘটিকার দিকে আসামী হাসিবের বাড়ীর সামনে আসলে আসামী— অমি, নিহাল, হাসিবগন ভিকটিম রবিউল ইসলামের অটোরিক্সা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করে। বিভিন্ন জায়গায় আড্ডা দেয়। একপর্যায়ে শিবপুর থানাধীন সাতপাইকাস্থ ঘটনাস্থলে পৌছে অনুমান ১০—১৫ মিনিট আড্ডা দেয়। আড্ডা শেষে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা বলে আসামীদের দুইজন পিছনে এবং একজন আসামী সামনের সীটে ভিকটিম চালক রবিউল ইসলামের পাশে বসে এবং পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী হাসিব গোপনে নিয়ে আসা চাপাতি বের করে আসামী অমির হাতে দেয় এবং আসামী হাসিব ও নেহাল ভিকটিম রবিউলের হাত পা জাপটে ধরে রাখে এবং আসামী অমি চাপাতি দিয়ে বেপরোয়া ভাবে গলায় কুপায়। ঘটনাস্থলেই ভিকটিম রবিউল মৃত্যুবরন করে এবং আসামীগন ভিকটিমের মৃতদেহ ধাক্কা দিয়ে রাস্তার পাশে থাকা ধানক্ষেতে ফেলে দিয়ে ভিকটিমের অটোরিক্সা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবতীর্তে আসামী রাকিব, নাহিদ, জুয়েল ও হুমায়ুন অটোরিক্সাটির রং ও মডেল পরিবর্তন বিক্রয় ও হস্তান্তর করে এবং আসামী লিটন মিয়া ৩০,০০০/— টাকায় গাড়িটি ক্রয় করে। আসামী অমির স্বীকারোক্তি মতে আসামী নাহিদের চাচাতো ভাই বিশালের বাড়ী হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়।

পিবিআইয়ের সুপারিশঃ ইজিবাইক/সিএনজি/অটোরিকশা/ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা ছিনতাই/চুরি করে খুন করার প্রতিকার সম্পর্কে পিবিআই এর সুপারিশসমূহ—

১। সিএনজির মত অটোরিক্সা/ইজিবাইকের চালকের নিরাপত্তার জন্য তার আসন ঘিরে ৩ দিকে লোহার গ্রীলের ব্যবস্থা থাকা।

২। চালকের পাশের সিটে কোনো যাত্রী না বসানো।   

৩। ইজিবাইক/অটোরিকশার চালকদের মাদক সেবনে নিরুৎসাহিত করতে হবে এবং মাদকাসক্ত চালকদের গাড়ী না দেয়া।

৪। চুরি/ছিনতাইকৃত ইজিবাইক/অটোরিকশার লোকেশন ট্রাক করার জন্য ডিজিটাল ডিভাইস সংযোগ করা যেতে পারে।

৫। চালকদেরর রাতের বেলায় ইজিবাইক/অটোরিকশা না চালাতে নিরুৎসাহিত করা এবং নির্জন এলাকায় অধিক সর্তকতার সহিত গাড়ী চালাতে হবে।

৬। যাত্রীগন অনেক সময় অধিক ভাড়ার প্রস্তাব করে কোথায় যাওয়ার জন্য বললে সেখানে না যাওয়া।

৭। ইজিবাইক/অটোরিকশা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নির্দিষ্ট এলাকায় ও রাস্তায় চলাচলের ব্যবস্থা করা উচিত।

৮। অপরিচিত কারো দেয়া খাবার গ্রহন না করা ও নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহন না করার ব্যপারে ইজিবাইক/অটোরিকশার চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

ফেসবুকের মাধ্যমে ভিকটিমের পরিচয় সনাক্ত করে অটোরিক্সা ছিনতাই মামলার রহস্য উদঘাটন

জুয়া ও নেশার টাকার জন্য গলা কেটে হত্যা করা হয় অটো চালক রবিউলকে

নরসিংদী প্রতিনিধি
Update Time : ০৫:২৫:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪

অনলাইন জুয়া ও নেশার টাকা যোগানের উদ্দেশ্যে ভিকটিম রবিউল ইসলামকে গলা কেটে হত্যা করে অটো ছিনতাই মামলার রহস্য উৎঘাটন করেছে পিবিআই নরসিংদী জেলা। ঘটনার সাথে জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাইকৃত অটোরিক্সা এবং হত্যার ব্যবহৃত চাপাতি।

গত ২৯/১০/২০২৩ ইং তারিখ সকালে জানা যায় যে, নরসিংদী জেলার শিবপুর থানা এলাকার সাতপাইকা পাঁকা রাস্তার পাশে জনৈক নয়ন মিয়ার ধানক্ষেতে একটি অজ্ঞাতনামা কিশোরের জবাই করা লাশ পড়ে আছে। সংবাদ পেয়ে পিবিআই নরসিংদী জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) জনাব মোঃ এনায়েত হোসেন মান্নান সহ পিবিআই নরসিংদী জেলার ক্রাইমসীন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সরেজমিনে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

পিবিআই নরসিংদী জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) জনাব মোঃ এনায়েত হোসেন মান্নান মহোদয়ের প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনায় নরসিংদী জেলার ক্রাইমসীন টিম তথ্যপ্রযুক্তি ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ভিকটিমের পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরবতীর্তে ভিকটিম রবিউল ইসলামের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে নরসিংদীর শিবপুর থানার মামলা নং—২৩, তারিখঃ ৩০/১০/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা—৩০২/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন। বর্তমান সময়ে প্রায়শই গাড়ি/অটোরিক্সা ছিনতাই করতঃ চালককে হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটছে। যা অত্যান্ত দুঃখজনক। জনস্বার্থ ও গুরুত্বের বিবেচনায় মামলাটি পিবিআই নরসিংদী স্ব—উদ্যেগে গ্রহণ করে।

মামলার ঘটনার তদন্তে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নিঃ) সাদেকুল সিকদার সহ পিবিআই নরসিংদীর একাধিক চৌকস টিম নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ সহ ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে। ঘটনার কোন ক্লু না থাকায় শিবপুর অঞ্চলে যাদের চোরাই অটো বাইক/গাড়ি চোরাই ক্রয়বিক্রয়ে দুর্নাম ও জনশ্রম্নতি রয়েছে যাচাই করতঃ সন্দিগ্ধ আসামী রাকিবুল(২০) কে গ্রেফতার করা করি। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে উক্ত আসামী ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অটোরিক্সাটি নাহিদের মাধ্যমে বিক্রয়ে সহায়তা করেছে বলে জানায়। কিন্তু হত্যার বিষয়ে কোন কথা স্বীকার করেনি। তারই দেওয়া তথ্যমতে সন্দিগ্ধ আসামী— ২। মোঃ নাহিদ শেখ(২২) কে গ্রেফতার করা হয়। আসামী নাহিদ অটোরিক্সাটি বিক্রয়ের কথা স্বীকার করে এবং যে গ্যারেজে বেঁচাকেনা হয়েছিল তা দূর থেকে সনাক্ত করে। এছাড়া আমাদের নিয়োগকৃত সোর্স শিবপুর কলেজ গেইট এলাকায় এধরনের একটি অটোগাড়ি দেখেছে বলে জানালে আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে ঐ সকল এলাকায় একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করতঃ অটো চালককে সনাক্ত করতঃ আসামী—৩। মোঃ হুমায়ুন(৪০) কে গ্রেফতার করি। তার দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকান্ডের পরে ছিনতাইকৃত অটোরিক্সাটি গ্যারেজ মালিক আসামী—৪। মোঃ লিটন খাঁন(৪৫) এর গ্যারেজ হতে উদ্ধার করা হয়। জানা যায় যে, গাড়িটি যাতে কেউ চিনতে না পারে তাই গাড়ির রং ও কিছু পার্টস পরিবর্তন করে নতুন রুপদান করে এবং গ্যারেজ মালিক আসামী মোঃ লিটন খাঁন উক্ত অটোরিক্সাটি ৩০ হাজার টাকায় ক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করে। পরবতীর্তে নাহিদকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করায় যারা নাহিদের কাছে ছিনতাইকৃত অটোরিক্সাটি নিয়ে আসছিল তাদের নাম প্রকাশ করে। হত্যার সাথে জড়িত উক্ত আসামীগন ঘটনার পরক্ষনেই গাঁ ঢাকা দেওয়ায় অনেক সময় ধর্য্য নিয়ে অভিযান করা হয় এবং ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকারী দুইজন সহ গাড়ি ক্রয় বিক্রয়, রং ও মডেল পরিবর্তন ও সংরক্ষণের সংশ্লিষ্ট ০৫(পাঁচ) জন আসামী নিজেদের সম্পৃক্ত করে কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করে।

তাদের দেওয়া তথ্যমতে জানা যায় যে, ভিকটিম রবিউল হত্যকান্ড ও অটোরিক্সা ছিনতাইয়ে প্রত্যেক্ষভাবে জড়িত আসামী— অমি, নিহাল, হাসিবগন একই সাথে চলাফেরা করতো। তারা অনলাইনে জুয়া খেলতো ও নিয়মিত মাদক সেবন করতো। একপর্যায়ে আসামীরা জুয়া ও মাদক সেবনের টাকা উপার্জনের উদ্দেশ্যে ভিকটিম রবিউল ইসলামকে হত্যা করে তার সাথে থাকা অটোরিক্সাটি ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ি মামলার ঘটনার তারিখ বিকাল অনুমান ০২.০০ ঘটিকার দিকে আসামী— অমি, নিহাল, হাসিবগন শিবপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ভিকটিম রবিউল ইসলামকে পেয়ে ভিকটিমকে তার অটোরিক্সা নিয়ে বিকাল ৪.০০ ঘটিকার দিকে আসামী শাজিদুল ইসলাম হাসিব এর বাড়ীর সামনে থাকতে বলে। আসামী— ১। অমি ও ২। নিহালদ্বয় বিকাল ৪.০০ ঘটিকার পূর্বেই অপর আসামী হাসিরের বাড়ীর সামনে উপস্থিত হয়। ভিকটিম রবিউল ইসলাম বিকাল ৪.০০ ঘটিকার দিকে আসামী হাসিবের বাড়ীর সামনে আসলে আসামী— অমি, নিহাল, হাসিবগন ভিকটিম রবিউল ইসলামের অটোরিক্সা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করে। বিভিন্ন জায়গায় আড্ডা দেয়। একপর্যায়ে শিবপুর থানাধীন সাতপাইকাস্থ ঘটনাস্থলে পৌছে অনুমান ১০—১৫ মিনিট আড্ডা দেয়। আড্ডা শেষে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা বলে আসামীদের দুইজন পিছনে এবং একজন আসামী সামনের সীটে ভিকটিম চালক রবিউল ইসলামের পাশে বসে এবং পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী হাসিব গোপনে নিয়ে আসা চাপাতি বের করে আসামী অমির হাতে দেয় এবং আসামী হাসিব ও নেহাল ভিকটিম রবিউলের হাত পা জাপটে ধরে রাখে এবং আসামী অমি চাপাতি দিয়ে বেপরোয়া ভাবে গলায় কুপায়। ঘটনাস্থলেই ভিকটিম রবিউল মৃত্যুবরন করে এবং আসামীগন ভিকটিমের মৃতদেহ ধাক্কা দিয়ে রাস্তার পাশে থাকা ধানক্ষেতে ফেলে দিয়ে ভিকটিমের অটোরিক্সা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবতীর্তে আসামী রাকিব, নাহিদ, জুয়েল ও হুমায়ুন অটোরিক্সাটির রং ও মডেল পরিবর্তন বিক্রয় ও হস্তান্তর করে এবং আসামী লিটন মিয়া ৩০,০০০/— টাকায় গাড়িটি ক্রয় করে। আসামী অমির স্বীকারোক্তি মতে আসামী নাহিদের চাচাতো ভাই বিশালের বাড়ী হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়।

পিবিআইয়ের সুপারিশঃ ইজিবাইক/সিএনজি/অটোরিকশা/ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা ছিনতাই/চুরি করে খুন করার প্রতিকার সম্পর্কে পিবিআই এর সুপারিশসমূহ—

১। সিএনজির মত অটোরিক্সা/ইজিবাইকের চালকের নিরাপত্তার জন্য তার আসন ঘিরে ৩ দিকে লোহার গ্রীলের ব্যবস্থা থাকা।

২। চালকের পাশের সিটে কোনো যাত্রী না বসানো।   

৩। ইজিবাইক/অটোরিকশার চালকদের মাদক সেবনে নিরুৎসাহিত করতে হবে এবং মাদকাসক্ত চালকদের গাড়ী না দেয়া।

৪। চুরি/ছিনতাইকৃত ইজিবাইক/অটোরিকশার লোকেশন ট্রাক করার জন্য ডিজিটাল ডিভাইস সংযোগ করা যেতে পারে।

৫। চালকদেরর রাতের বেলায় ইজিবাইক/অটোরিকশা না চালাতে নিরুৎসাহিত করা এবং নির্জন এলাকায় অধিক সর্তকতার সহিত গাড়ী চালাতে হবে।

৬। যাত্রীগন অনেক সময় অধিক ভাড়ার প্রস্তাব করে কোথায় যাওয়ার জন্য বললে সেখানে না যাওয়া।

৭। ইজিবাইক/অটোরিকশা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নির্দিষ্ট এলাকায় ও রাস্তায় চলাচলের ব্যবস্থা করা উচিত।

৮। অপরিচিত কারো দেয়া খাবার গ্রহন না করা ও নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহন না করার ব্যপারে ইজিবাইক/অটোরিকশার চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।