গাসিক নির্বাচন
জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল
- Update Time : ০১:০৩:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩
- / ১৭৪ Time View
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। জাহাঙ্গীর ছাড়াও আরও দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নও বাতিল করা হয়েছে।
রোববার (৩০ এপ্রিল) মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন রির্টানিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম।
জেলা শহরের রথখোলা এলাকায় বঙ্গতাজ মিলনায়তনে অবস্থিত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
এদিকে, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও তার মায়ের মনোনয়নপত্র বৈধ বলে জানিয়েছে রিটার্নিং কর্মকর্তা। ঋণ খেলাপির দায়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিলের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘একটি গার্মেন্ট কারখানার ঋণের গ্যারান্টার ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। ওই প্রতিষ্ঠানটি ঋণ খেলাপি হওয়ার কারণে গ্যারান্টার হিসেবে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়।’
রির্টানিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের অনন্য তথ্য সঠিক থাকলেও তার ব্যাংকের একটি স্টেটমেন্ট সমস্যার কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এছাড়া ৩০০ জন সমর্থনকারীর স্বাক্ষর বিহীন মনোনয়নয়পত্র জমা দেওয়ায় অলিউর রহমান ও যথাযথ কাগজপত্র না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তবে যেহেতু সময় আছে। তাদের আপিল করার সুযোগ রয়েছে।
এব্যাপারে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মধ্যে কোনাবাড়ি এলাকায় কোরিয়ান মালিকানাধীন একটি কম্পোজিট কারখানা রয়েছে। ওই কোম্পানির মধ্যে আমার কোনো শেয়ার নেই। সেখান থেকে কোনো লভ্যাংশও নেই না। তবুও হাজার হাজার শ্রমিকদের বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে আমার নিজের সম্পদ দিয়েছি। ব্যাংকের মর্গেজ নিয়ে সেই কোরিয়ান মালিক লোন নিয়ে কারখানাটি চলমান রেখেছে। করোনা মহামারির কারণে কোরিয়ানরা ব্যাংকে যথাসময়ে পেমেন্ট দিতে পারেনি। আমি প্রার্থী হওয়ার পর গত ১১ এপ্রিল ও ১৮ এপ্রিল কোরিয়ানরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের যে পাওনা ছিল তা পরিশোধ করেছে। কোরিয়ান কোম্পনি ১৭ এপ্রিল অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা টাকা পরিশোধ করেছে। সেই সমস্ত কাগজপত্র আইনজীবী এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়েছে। তারপরও আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মনোনয়ন বাতিলের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছে। কোনো অদৃশ্যের চাপে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছে কিনা জানি না। আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। ব্যাংকের পাওনার ইনস্টলমেন্ট জমা দেওয়ার কথা কতৃর্পক্ষ লিখিত ও মৌখিক জবানবন্দি দিয়েছে। তারপরও আপনারা (নির্বাচন কমিশন) যে কাজটি করলেন তাতে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। আপনারা নিরপেক্ষতার মধ্যে ছিলেন না। তবে আমি ন্যায় বিচার পেতে আপিল করবো। প্রয়োজনে আমি হাইকোর্টে যাবো। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যেতে চাই।’
রিটার্নিং কর্মকতা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমরা মনোনয়নপত্র সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করেছি। জাহাঙ্গীর আলমের অন্যসব কাগজপত্র সঠিক আছে। তবে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো তথ্যে সমস্যা রয়েছে। এর স্বপক্ষে জাহাঙ্গীর আলম ব্যাংকে টাকা জমা করার কিছু কাগজপত্র আমাদের কাছে দিয়েছেন। তবে তা আমার কাছে যথার্থ মনে হয়নি। এজন্য জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রার্থীর আপিল করার সুযোগ রয়েছে। তাই তিনি আপিল করতে পারবেন।
এর আগে জাহাঙ্গীর আলম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছে নৌকা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেন। তবে দল তাকে মনোনয়ন না দিলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন তিনি। মেয়র পদে তার মনোনয়নপত্র জমাদানের দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার মা জায়দা খাতুনেরও মনোনয়ন পত্র জমা দেন। ১২জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিলেও কাগজপত্র যাচাই—বাছাইয়ের পর ৩জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নৌকার টিকিটে মেয়র নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর আলম। দুই বছর আগে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। এরপর মেয়র পদও হারান। তবে গত ১ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরকে দলে ফিরিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ। এবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন তিনি