ঢাকা ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের মধ্যে সু-কৌশলে বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে

নওরোজ রিপোর্ট
  • Update Time : ০৭:৫৪:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
  • / ২৫ Time View

জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের মধ্যে অত্যন্ত সু-কৌশলে বিরোধ ও বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। এর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে তারা গত রবিবার তিনজন সিনিয়র সদস্যের বিরুদ্ধে ‘‘মনগড়া ও ঠুনকো” অজুহাত তুলে তাদের সদস্যপদ সরাসরি বাতিল করেছে। এই তিনজন সিনিয়র সদস্য হলেন দৈনিক নওরোজ সম্পাদক শামসুল হক দুররানী, আওয়ামী আমলে বাসস-থেকে বিতাড়িত সিনিয়র ফটো সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আসাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান। আসাদুজ্জামান আসাদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে কালো পতাকা দেখাতে গিয়ে নিগৃহীত হয়েছেলেন। আওয়ামী ফোরামও সদস্যপদ বাতিল করে তাকে ৯ বছর ক্লাবের বাইরে রেখেছিল।

এদিকে জাতীয়তাবাদী ফোরামের একনিষ্ঠ নেতা শওকত মাহমুদের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে স্বৈরাচারকে সহযোগিতা করেছেন। এর আগে অবশ্য তাকে বিএনপি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। সেই যাই হোক প্রেস ক্লাব আর বিএনপি তো এক জিনিস নয়। এই শওকত মাহমুদ জাতীয় প্রেস ক্লাবের চার বারের সেক্রেটারী, দুইবারের প্রেসিডেন্ট, একবার যুগ্ম সম্পাদক। অর্থাৎ ১৪ বছর তিনি ক্লাবের কর্মকর্তা ছিলেন। অন্যদিকে দুইবার বিএফইউজের মহাসচিব, দুইবার প্রেসিডেন্ট অর্থাৎ ৮ বছর বিএফইউজের সর্বোচ্চ পদে ছিলেন। সব মিলিয়ে ২২ বছর তিনি জাতীয়তাবাদী ফোরামকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার সদস্য পদও ঠুনকো অজুহাত দেখিয়ে স্থগিত করা হয়েছে।

গত ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেস ক্লাবের অতিরিক্ত সাধারণ সভা বানচাল প্রচেষ্টার অভিযোগে তিন জনের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। আসলে বাস্তবতা কি ছিল?

সভার শুরুতে জনাব শামসুল হক দুররানী দাঁড়িয়ে প্রেস ক্লাব গঠনতন্ত্রের ২৩ অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলতে চাচ্ছিলেন যে, গঠনতন্ত্রের ২৩ ধারা মোতাবেক আপনি এই সভায় সভাপতিত্ব করতে পারেন না।

এই কথা বলতে না বলতেই সাঈদ খান, জিয়া উদ্দিন সাইমুম, মোশাররফ, খন্দকার আলমগীরসহ কতিপয় নতুন সদস্য তার দিকে তেড়ে আসেন। অথচ প্রেস ক্লাবের ইতিহাসে এই ঘটনা নজিরবিহীন। যে সব নতুন সদস্য এই হামলায় অংশ নেন তাদের সদস্যপদ এখনো স্থায়ী হয়নি। কিন্তু মঞ্চ থেকে এ ব্যাপারে কোন উচ্চবাচ্যই করা হয়নি। এখন উল্টো উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে বলা হচ্ছে শামসুল হক দুররানী সভা বানচালের চেষ্টা করেছেন। তার সাথে আসাদুজ্জামান আসাদ ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান হামলাকারীদের হাত থেকে জনাব দুররানীকে উদ্ধার করতে গিয়েছেলেন। তাদেরকেও একই অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই বলতে হয়, হায়রে সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ! জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রকৃতপক্ষে নব্য ফ্যাসিবাদের আবির্ভাব ঘটেছে বলে অনেক সিনিয়র সদস্যের অভিমত। মূলতঃ প্রেস ক্লাব এখন একটি ক্ষুদ্র দলের সমর্থকদের দখলে চলে গেছে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।

এদিকে প্রেস ক্লাব দাবী করছে, ১৬ নভেম্বরের অতিরিক্ত সাধারণ সভায় সর্বসম্মতভাবে নির্বাচন এক বছর পিছিয়ে দেয়ায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনেকটা প্রকৃতপক্ষে এটি ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত। কারণ সভাপতি প্রস্তাবটি হ্যাঁ-না ভোটে দেন। প্রস্তাবের পক্ষে যারা তারা হাত উঠান। অধিকাংশ সদস্য হাত উঠান সত্য। কিন্তু যারা হাত উঠান তাদের অনেকেই স্থায়ী সদস্য নন। নতুন সদস্যদের এখনো ভোটাধিকার হয়নি। সদস্য পদ পাওয়ার পর এক বছর পূর্ণ না হলে তাদের ভোটাধিকার হয়না। এটাই গঠনতান্ত্রিক বিধান। প্রস্তাবের পক্ষে যেমন ছিলেন। বিপক্ষেও ছিলেন অনেকে। তাই সর্বসম্ভত সিধান্ত দাবী করাটা ও সার্বিক নয়। তাই অনেকটা গায়ের জোরেই সর্বস্মভবত সিদ্ধান্ত বলা হচ্ছে। (চলবে)।

Please Share This Post in Your Social Media

জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের মধ্যে সু-কৌশলে বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে

নওরোজ রিপোর্ট
Update Time : ০৭:৫৪:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের মধ্যে অত্যন্ত সু-কৌশলে বিরোধ ও বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। এর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে তারা গত রবিবার তিনজন সিনিয়র সদস্যের বিরুদ্ধে ‘‘মনগড়া ও ঠুনকো” অজুহাত তুলে তাদের সদস্যপদ সরাসরি বাতিল করেছে। এই তিনজন সিনিয়র সদস্য হলেন দৈনিক নওরোজ সম্পাদক শামসুল হক দুররানী, আওয়ামী আমলে বাসস-থেকে বিতাড়িত সিনিয়র ফটো সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আসাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান। আসাদুজ্জামান আসাদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে কালো পতাকা দেখাতে গিয়ে নিগৃহীত হয়েছেলেন। আওয়ামী ফোরামও সদস্যপদ বাতিল করে তাকে ৯ বছর ক্লাবের বাইরে রেখেছিল।

এদিকে জাতীয়তাবাদী ফোরামের একনিষ্ঠ নেতা শওকত মাহমুদের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে স্বৈরাচারকে সহযোগিতা করেছেন। এর আগে অবশ্য তাকে বিএনপি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। সেই যাই হোক প্রেস ক্লাব আর বিএনপি তো এক জিনিস নয়। এই শওকত মাহমুদ জাতীয় প্রেস ক্লাবের চার বারের সেক্রেটারী, দুইবারের প্রেসিডেন্ট, একবার যুগ্ম সম্পাদক। অর্থাৎ ১৪ বছর তিনি ক্লাবের কর্মকর্তা ছিলেন। অন্যদিকে দুইবার বিএফইউজের মহাসচিব, দুইবার প্রেসিডেন্ট অর্থাৎ ৮ বছর বিএফইউজের সর্বোচ্চ পদে ছিলেন। সব মিলিয়ে ২২ বছর তিনি জাতীয়তাবাদী ফোরামকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার সদস্য পদও ঠুনকো অজুহাত দেখিয়ে স্থগিত করা হয়েছে।

গত ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেস ক্লাবের অতিরিক্ত সাধারণ সভা বানচাল প্রচেষ্টার অভিযোগে তিন জনের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। আসলে বাস্তবতা কি ছিল?

সভার শুরুতে জনাব শামসুল হক দুররানী দাঁড়িয়ে প্রেস ক্লাব গঠনতন্ত্রের ২৩ অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলতে চাচ্ছিলেন যে, গঠনতন্ত্রের ২৩ ধারা মোতাবেক আপনি এই সভায় সভাপতিত্ব করতে পারেন না।

এই কথা বলতে না বলতেই সাঈদ খান, জিয়া উদ্দিন সাইমুম, মোশাররফ, খন্দকার আলমগীরসহ কতিপয় নতুন সদস্য তার দিকে তেড়ে আসেন। অথচ প্রেস ক্লাবের ইতিহাসে এই ঘটনা নজিরবিহীন। যে সব নতুন সদস্য এই হামলায় অংশ নেন তাদের সদস্যপদ এখনো স্থায়ী হয়নি। কিন্তু মঞ্চ থেকে এ ব্যাপারে কোন উচ্চবাচ্যই করা হয়নি। এখন উল্টো উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে বলা হচ্ছে শামসুল হক দুররানী সভা বানচালের চেষ্টা করেছেন। তার সাথে আসাদুজ্জামান আসাদ ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান হামলাকারীদের হাত থেকে জনাব দুররানীকে উদ্ধার করতে গিয়েছেলেন। তাদেরকেও একই অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই বলতে হয়, হায়রে সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ! জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রকৃতপক্ষে নব্য ফ্যাসিবাদের আবির্ভাব ঘটেছে বলে অনেক সিনিয়র সদস্যের অভিমত। মূলতঃ প্রেস ক্লাব এখন একটি ক্ষুদ্র দলের সমর্থকদের দখলে চলে গেছে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।

এদিকে প্রেস ক্লাব দাবী করছে, ১৬ নভেম্বরের অতিরিক্ত সাধারণ সভায় সর্বসম্মতভাবে নির্বাচন এক বছর পিছিয়ে দেয়ায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনেকটা প্রকৃতপক্ষে এটি ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত। কারণ সভাপতি প্রস্তাবটি হ্যাঁ-না ভোটে দেন। প্রস্তাবের পক্ষে যারা তারা হাত উঠান। অধিকাংশ সদস্য হাত উঠান সত্য। কিন্তু যারা হাত উঠান তাদের অনেকেই স্থায়ী সদস্য নন। নতুন সদস্যদের এখনো ভোটাধিকার হয়নি। সদস্য পদ পাওয়ার পর এক বছর পূর্ণ না হলে তাদের ভোটাধিকার হয়না। এটাই গঠনতান্ত্রিক বিধান। প্রস্তাবের পক্ষে যেমন ছিলেন। বিপক্ষেও ছিলেন অনেকে। তাই সর্বসম্ভত সিধান্ত দাবী করাটা ও সার্বিক নয়। তাই অনেকটা গায়ের জোরেই সর্বস্মভবত সিদ্ধান্ত বলা হচ্ছে। (চলবে)।