গাজীপুরে কলেজছাত্রীকে ‘খুন করে’ পালালেন মসজিদের ইমাম

- Update Time : ১০:১৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩
- / ৫০ Time View
গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক কলেজছাত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা এবং তার মা ও এক বোনকে আহত করে পালিয়ে গেছেন মসজিদের ইমাম। সোমবার রাতে গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কলেজছাত্রীর নাম রাবেয়া আক্তার (২৩)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। এ ঘটনায় ওই কলেজছাত্রীর মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজাকে (১৫) গুরুতর আহতাবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গাজীপুর সদর মেট্রো থানার ওসি জিয়াউল হক জানান, দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফ তার স্ত্রী চার মেয়ে রাবেয়া আক্তার (২১), হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫), জান্নাত (১৩) ও এক ছেলে নিয়ে বসবাস করেন। তিনি সালনা বাজারে আরএফএল প্লাস্টিক শো রুমে চাকরি করেন। তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তার ২০২০ সালে জয়দেবপুর সরকারী মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। সে স্টুডেন্ট ভিসায় ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভিসাসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম প্রসেসিং করতে থাকে। তার ছোট দুই বোন খাদিজা ও জান্নাতকে কোরআন শিক্ষার জন্য স্থানীয় টেকিবাড়ী সাকিনের টেকিবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম মো. সাইদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আব্দুর রউফের ছোট দুই মেয়েকে পড়ানোর জন্য বাসায় যাওয়া-আসার সুবাদে বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তারের দিকে কুনজর পড়ে ইমাম সাইদুল ইসলামের। কিছুদিন পরে সে রাবেয়া আক্তারকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে রাবেয়ার পরিবার সরাসরি ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এতে সাইদুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়। তাকে বাসায় এসে পড়াতে নিষেধ করা হয়। এতে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়াকে কলেজে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করত এবং প্রাণনাশের হুমকি দিত।
তিনি বলেন, একপর্যায়ে সাইদুল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাবেয়া আক্তারের বাড়িতে গিয়ে তার কক্ষে ঢুকে ছুরি দিয়ে রাবেয়ার মাথায়, গলায়, হাতে, পায়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। রাবেয়ার চিৎকারে তার মা, ছোট বোন হাবিবা ও খাদিজা দৌড়ে রাবেয়ার কক্ষে গিয়ে দেখে সাইদুল ইসলাম ছুরি দিয়ে রাবেয়াকে এলোপাতাড়িভাবে কোপাচ্ছে। তারা রাবেয়াকে রক্ষা করতে গেলে মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজাকেও কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় সাইদুল ইসলাম। পরে চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাবেয়া আক্তার ওই হাসপাতালে মারা যায়। গুরুতর আহত মা ছোট বোনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে সাইদুল ইসলামকে আসামি করে মঙ্গলবার সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ আসামিকে ধরতে অভিযান পরিচালনা করছে।