গাজীপুরের কিন্ডারগার্টেগুলোর নেই সরকারি নিবন্ধন ও নীতিমালা

- Update Time : ০২:১৭:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ১৫৩ Time View
গাজীপুরের যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য কিন্ডারগার্টেন নামের স্কুল। তাদের না আছে সরকারি রেজিষ্ট্রেশন না আছে কোন নীতিমালা। ফলে তারা সরকারি বিধিমালার তোয়াক্তা না করেই যে যারমতো টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন শিক্ষা বিতরণের নামে। তারা চটকদার বিজ্ঞাপণ দিয়ে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে শিক্ষা বাণিজ্য করে চলেছে অবিরাম। সরকারের শিক্ষা বিভাগও তাদের বিরুদ্ধে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে প্রাপ্ত এক তথ্যে দেখা যায়- গাজীপুরে হাজার হাজার কিন্ডার গার্টেন স্কুল থাকলেও সরকারি রেজিষ্ট্রেশন আছে মাত্র দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। সে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটি হলো- মাইলস্টোন প্রিপারেটরী কেজি স্কুল, সদর, গাজীপুর এবং লিংকন স্কুল।
সরেজমিনে দেখা যায়- এ শিক্ষা বছরে সরকার এখনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতেই বই প্রদান করতে পারেনি। সেখানে বই বিতরণের সময় এই অবৈধ তথা রেজিষ্ট্রেশন বিহীন কিন্ডার গার্টেন স্কুল গুলো জোট বেধে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় বই বিতরণ কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। তাদের দাবি ছিলো সরকারি প্রতিষ্ঠানের পূর্বেই তাদেরকে রেজি: বিহীন কিন্ডার গার্টেনে বই প্রদান করতে হবে। এক পর্যায়ে তারা গাজীপুর সদর শিক্ষা অফিস পর্যন্ত ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়।
এ ঘটনায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ ভূঁইয়া বলেন, আমি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই কিন্ডার গার্টেন গুলোর রেজিস্টেশনের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
মাসুদ ভুঁইয়া গাজীপুরে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে দু’বছর অতিক্রম করলেও এতোদিন কেন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
অপরদিকে গাজীপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম এ বিষয়ে বলেন- আমি এ পদে গত অল্প কয়েকদিন আগে যোগদান করি। অতপর আমি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে গেলে কিন্ডার গার্টেন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও শিক্ষকদের রোষানলের শিকার হই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- আমাদের কতিপয় কর্মকর্তারাই এ জন্য দায়ী। তিনি তার পক্ষ থেকে সমস্য সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান।
শিক্ষা সচেতন মানুষজন বলছেন, সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুল করেন না। তাদের অবহেলার কারণেই কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলোর উৎপত্তি।
আবার অনেকে বলেন- কিন্ডরগার্টেন স্কুল গুলোতে প্রশিক্ষিত কোন শিক্ষক থাকেনা। অনেক স্কুলই টেনেটুনে মেট্রিক পাস করা শিক্ষক দিয়ে চলছে। আবার কিন্ডার গার্টেন স্কুল গুলো খুব সকালে শুরু হওয়ায়, অনেক শিক্ষার্থী মক্তবে যেতে পারেনা। ফলে আরবি শিক্ষা থেকেও তারা বঞ্চিত হয়। এ ছাড়া কিন্ডারগার্টেন স্কুলে একজন শিক্ষার্থীর খরচও অনেক বেশী। তারা খেটে খাওয়া মানুষের পকেট ফাঁকা করে ফেলে খুব সহজে।
সর্বোপরি কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোকে সরকারি একটি নীতিমালার আওতায় আনা দরকার। যাতে করে প্রাথমিক শিক্ষাটি একটি নির্দিষ্ট নিয়মে চলতে পারে এবং সাধারণ মানুষ প্রতারণার ফাঁদ থেকে রক্ষা পায়। পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগুলোকেও শিক্ষাঙ্গণে সচেতন করতে হবে। তাদের ফাঁকিবাজি বন্ধ হলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতি মানুষের বিশ্বাস ফিরে আসবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়