ঢাকা ০৫:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এলাকায় আতংকের নাম ছাত্রদল নেতা রিফাত মোড়ল

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : ১১:১০:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৪৫ Time View

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার সিংগারদিঘী এলাকার বাসিন্দাদের রাতে ঘুম হারাম করে দিয়েছে ছাত্রদলের এক নেতা। প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে জবর দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সিংগারদিঘী এলাকার মোক্তারুল করিম শামীম মোড়লের ছেলে জিয়াউল করিম রিফাত মোড়ল (৩০)। সে শ্রীপুর উপজেলা ছাত্র দলের আহবায়ক এবং গাজীপুর জেলা ছাত্র দলের যুগ্ম সম্পাদক।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর শ্রীপুর উপজেলা ছাত্র দলের আহবায়ক নিজ এলাকা সিংগারদিঘীতে জবর দখল ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছে। এমনকি বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীদের জমি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানও তিনি দখল করে নিয়েছেন। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

স্থানীয় ভূক্তভোগী মোফাজ্জল হোসেন (৫০) সম্প্রতি শ্রীপুর মডেল থানায় ছাত্রদল নেতা রিফাত মোড়লসহ ১০জনের বিরুদ্ধে অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার পৈত্রিক জমি জবর দখল করার জন্য বহুদিন যাবৎ খুন জখমের হুমকি দিয়ে আসছিলেন জিয়াউল করিম রিফাত মোড়লসহ অন্যান্যরা। গত ৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই জমি জবর দখল করার জন্য লোহার রড, দা, সাবল, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করে।

সংবাদ পেয়ে মোফাজ্জল ও তার চাচাত ভাই লুৎফর রহমান (৪৫) জমিতে গেলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এসময় প্রতিবাদ করলে অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা করে। এসময় লুৎফর রহমানের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা হুমকি দেয় পুনরায় জমি যে কোন উপায়ে জবর দখল করে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করবে। এতে যদি বাধা প্রদান করা হয় তাহলে খুন করে লাশ মাটিতে পুতে ফেলবে।

আরো জানা যায়, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন যখন গাজীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন তখন রিফাত মোড়লের বাবা মোক্তারুল করিম শামীম মোড়লের সাথে গাঢ় সখ্যতা ছিলো। তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল হারুনের। হারুনের বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল মোক্তারুল করিম শামীম মোড়ল। আর এখন বাবা ছেলে দুজনেই নেমেছেন দখল বাণিজ্যে।

ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হাজী সালাম জানান, রিফাত মোড়ল নিজে উপস্থিত থেকে তার সাথে এক থেকে দেড়’শ লোক নিয়ে সিংগারদিঘী এলাকার ফিসপার্ক প্রজেক্ট, নকুন কিটনাশক কারখানা, শিরিষগুড়ি গ্রামের আবু হানিফের কৃষি জমি দখলে হামলা চালায়। এসবের সাথে রিফাতের বাবা শামীমও জড়িত। এছাড়া নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে অনেক বিএনপি নেতাদের ব্যবাসা দখলসহ মামলায় জড়ানোর অভিযোগও রয়েছে বাবা ছেলের বিরুদ্ধে। তারা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চাঁদার জন্য হুমকী প্রদান করেছেন।তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সিংগারদিঘী এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে জিয়াউল করিম রিফাত মোড়ল বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা। রাজনৈতিক ভাবে হেয় করার জন্য এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমারপূর্ব পুরুষ বিএনপি’ রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। আমিও বিএনপি’র আদর্শে বিশ্বাসী। যারা রাজনৈতিকভাবে অযোগ্য তারা এসব অভিযোগ আনছেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী সরকারের আমলে একাধিক মামলা হয়েছে এলাকায় থাকতে পারিনি। এখন এলাকায় ফিরে আসাতে অনেকে শত্রুতা শুরু করেছে।

এবিষয়ে মাওনা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মিনহাজ সরকার বলেন, রিফাত মোড়লদের জবর দখল ও চাঁদাবাজির ঘটনার আমরা শুনেছি। অনেকে মৌখিক অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। তাদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলা হয়েছে। প্রয়োজন হলে দলীয় ভাবেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শ্রীপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি শাহজাহান ফকির বলেন, রিফাত মোড়ল এবং তার বাবা শামীম মোড়ল সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে। এবিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা প্রক্রীয়াধিন আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এলাকায় আতংকের নাম ছাত্রদল নেতা রিফাত মোড়ল

স্টাফ রিপোর্টার
Update Time : ১১:১০:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার সিংগারদিঘী এলাকার বাসিন্দাদের রাতে ঘুম হারাম করে দিয়েছে ছাত্রদলের এক নেতা। প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে জবর দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সিংগারদিঘী এলাকার মোক্তারুল করিম শামীম মোড়লের ছেলে জিয়াউল করিম রিফাত মোড়ল (৩০)। সে শ্রীপুর উপজেলা ছাত্র দলের আহবায়ক এবং গাজীপুর জেলা ছাত্র দলের যুগ্ম সম্পাদক।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর শ্রীপুর উপজেলা ছাত্র দলের আহবায়ক নিজ এলাকা সিংগারদিঘীতে জবর দখল ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছে। এমনকি বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীদের জমি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানও তিনি দখল করে নিয়েছেন। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

স্থানীয় ভূক্তভোগী মোফাজ্জল হোসেন (৫০) সম্প্রতি শ্রীপুর মডেল থানায় ছাত্রদল নেতা রিফাত মোড়লসহ ১০জনের বিরুদ্ধে অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার পৈত্রিক জমি জবর দখল করার জন্য বহুদিন যাবৎ খুন জখমের হুমকি দিয়ে আসছিলেন জিয়াউল করিম রিফাত মোড়লসহ অন্যান্যরা। গত ৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই জমি জবর দখল করার জন্য লোহার রড, দা, সাবল, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করে।

সংবাদ পেয়ে মোফাজ্জল ও তার চাচাত ভাই লুৎফর রহমান (৪৫) জমিতে গেলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এসময় প্রতিবাদ করলে অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা করে। এসময় লুৎফর রহমানের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা হুমকি দেয় পুনরায় জমি যে কোন উপায়ে জবর দখল করে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করবে। এতে যদি বাধা প্রদান করা হয় তাহলে খুন করে লাশ মাটিতে পুতে ফেলবে।

আরো জানা যায়, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন যখন গাজীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন তখন রিফাত মোড়লের বাবা মোক্তারুল করিম শামীম মোড়লের সাথে গাঢ় সখ্যতা ছিলো। তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল হারুনের। হারুনের বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল মোক্তারুল করিম শামীম মোড়ল। আর এখন বাবা ছেলে দুজনেই নেমেছেন দখল বাণিজ্যে।

ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হাজী সালাম জানান, রিফাত মোড়ল নিজে উপস্থিত থেকে তার সাথে এক থেকে দেড়’শ লোক নিয়ে সিংগারদিঘী এলাকার ফিসপার্ক প্রজেক্ট, নকুন কিটনাশক কারখানা, শিরিষগুড়ি গ্রামের আবু হানিফের কৃষি জমি দখলে হামলা চালায়। এসবের সাথে রিফাতের বাবা শামীমও জড়িত। এছাড়া নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে অনেক বিএনপি নেতাদের ব্যবাসা দখলসহ মামলায় জড়ানোর অভিযোগও রয়েছে বাবা ছেলের বিরুদ্ধে। তারা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চাঁদার জন্য হুমকী প্রদান করেছেন।তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সিংগারদিঘী এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে জিয়াউল করিম রিফাত মোড়ল বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা। রাজনৈতিক ভাবে হেয় করার জন্য এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমারপূর্ব পুরুষ বিএনপি’ রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। আমিও বিএনপি’র আদর্শে বিশ্বাসী। যারা রাজনৈতিকভাবে অযোগ্য তারা এসব অভিযোগ আনছেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী সরকারের আমলে একাধিক মামলা হয়েছে এলাকায় থাকতে পারিনি। এখন এলাকায় ফিরে আসাতে অনেকে শত্রুতা শুরু করেছে।

এবিষয়ে মাওনা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মিনহাজ সরকার বলেন, রিফাত মোড়লদের জবর দখল ও চাঁদাবাজির ঘটনার আমরা শুনেছি। অনেকে মৌখিক অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। তাদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলা হয়েছে। প্রয়োজন হলে দলীয় ভাবেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শ্রীপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি শাহজাহান ফকির বলেন, রিফাত মোড়ল এবং তার বাবা শামীম মোড়ল সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে। এবিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা প্রক্রীয়াধিন আছে।