ঢাকা ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
পুলিশের সাথে রোহিঙ্গা কিশোরী উধাও নোয়াখালীতে দিনমজুরকে জবাই করে হত্যা, ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষীদাতা সিরু বাঙালির ফাঁসির দাবি উন্নয়ন বৈষম্যের গ্যাঁড়াকলে রংপুর: একনেক থেকে বাদ পড়লো উন্নয়ন প্রকল্প আ’লীগ নেতা তুষার কান্তির ৭দিনের রিমান্ড মঞ্জুর সিলেট ওসমানী মেডিকেলের হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা বাংলাদেশকে দুই বিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক মানহানি মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান ফের ৫ দিনের রিমান্ডে আনিসুল হক ও সালমান বসুন্ধরা আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষককে পুনর্বহালে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ চায় শিক্ষার্থীরা

উপাচার্য না থাকায় স্থবির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

মোঃ হাছান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
  • Update Time : ০৯:২৯:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১৩ Time View

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত ৮ আগস্ট পদত্যাগ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। একই সঙ্গে ইস্তফা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া। তার কিছুদিন পর প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা , হল প্রভোস্ট, পরিবহন প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানরা পদত্যাগ করেন ।

এরপর থেকে এখনো নিয়োগ হয়নি উপাচার্য। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের প্রধানদের পদও শূন্য রয়েছে। ফলে হচ্ছে না সিন্ডিকেট সভা ও একাডেমিক কাউন্সিল। এতে বেড়েছে প্রশাসনিক জটিলতা। মূলত উপাচার্যহীনতায় স্থবির হয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক কার্যক্রম।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস অনলাইনে চললেও পরীক্ষাসহ অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। অধিকাংশ আবাসিক হল প্রভোস্ট পদ শূন্য থাকায় সেখানেও দেখা দিয়েছে নানা সংকট। সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছেন না হল দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। কোনো জটিলতা সৃষ্টি হলে তার অভিযোগ জানাতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। সবার প্রশ্ন, এই স্থবিরতা কাটবে কবে? এক মাস পেরোলেও এখনো মেলেনি ইবির উপাচার্য। সংকট নিরসনে সবার দাবি দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম পদত্যাগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি চলছে লাগাতার । এরই মধ্যে দেশের প্রধান সারির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ হলেও বাকি রয়েছে ইবি। আন্দোলনকারীদের দাবি দ্রুততম সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষকদের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হোক।

এদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নকিব নসরুল্লাহকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা গুঞ্জন শোনা গেলেও তার কোন সঠিক তথ্য ছিলনা । তাছাড়াও উপাচার্যসহ শীর্ষ পদগুলোতে নিয়োগ পেতে তদবির শুরু করেছেন আলোচনায় থাকা এমন শিক্ষকরা হলেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলীনূর রহমান, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মিজানূর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. নজিবুল হক, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন, লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান এবং আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মিজান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসনের জন্য অতি দ্রুত আমাদের একজন ভিসি প্রয়োজন। দীর্ঘদিন ভিসি না থাকায় অনেক জটিলতাও দেখা দিচ্ছে। আমরা অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকেই ভিসি নিয়োগ চাই।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্বে একটি বাণিজ্যিক ক্যাম্পাসে পরিণত করা হয়েছিল এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার বলতে কিছু ছিল না। কিন্তু পরিতাপে বিষয় দেশ স্বাধীন হওয়ার মাস পার হলেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়নি। তাই আমাদের দাবি সল্প সময়ের মাঝে একজন যোগ্য, সৎ, দুর্নীতিমুক্ত, সংস্কারমনা, শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বর্তমান সংকট নিরসন করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার ড. ওয়ালীউর রহমান পিকুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক প্রফেসর ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী স্যারকে প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে গতিশীল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু রেজিস্ট্রারসহ বিভিন্ন অফিসের অফিস প্রধান ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থক হিসেবে পদত্যাগ করেছেন এবং তাদের অনেকেই দুর্নীতি ও বিভিন্ন বিতর্কিত কাজের সঙ্গে জড়িত থাকায় অফিসে আসছেন না। যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনুপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। যার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এই স্থবিরতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে আসতে পারছে না।

আর এই স্থবিরতা দুর করতে অনতিবিলম্বে একজন সৎ, ছাত্রবান্ধব এবং প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উপাচার্য নিয়োগ অপরিহার্য। এই বিষয়ে সরকারকে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দাবি জানাচ্ছি।

Please Share This Post in Your Social Media

উপাচার্য না থাকায় স্থবির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

মোঃ হাছান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
Update Time : ০৯:২৯:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত ৮ আগস্ট পদত্যাগ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। একই সঙ্গে ইস্তফা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া। তার কিছুদিন পর প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা , হল প্রভোস্ট, পরিবহন প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানরা পদত্যাগ করেন ।

এরপর থেকে এখনো নিয়োগ হয়নি উপাচার্য। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের প্রধানদের পদও শূন্য রয়েছে। ফলে হচ্ছে না সিন্ডিকেট সভা ও একাডেমিক কাউন্সিল। এতে বেড়েছে প্রশাসনিক জটিলতা। মূলত উপাচার্যহীনতায় স্থবির হয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক কার্যক্রম।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস অনলাইনে চললেও পরীক্ষাসহ অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। অধিকাংশ আবাসিক হল প্রভোস্ট পদ শূন্য থাকায় সেখানেও দেখা দিয়েছে নানা সংকট। সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছেন না হল দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। কোনো জটিলতা সৃষ্টি হলে তার অভিযোগ জানাতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। সবার প্রশ্ন, এই স্থবিরতা কাটবে কবে? এক মাস পেরোলেও এখনো মেলেনি ইবির উপাচার্য। সংকট নিরসনে সবার দাবি দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম পদত্যাগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি চলছে লাগাতার । এরই মধ্যে দেশের প্রধান সারির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ হলেও বাকি রয়েছে ইবি। আন্দোলনকারীদের দাবি দ্রুততম সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষকদের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হোক।

এদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নকিব নসরুল্লাহকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা গুঞ্জন শোনা গেলেও তার কোন সঠিক তথ্য ছিলনা । তাছাড়াও উপাচার্যসহ শীর্ষ পদগুলোতে নিয়োগ পেতে তদবির শুরু করেছেন আলোচনায় থাকা এমন শিক্ষকরা হলেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলীনূর রহমান, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মিজানূর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. নজিবুল হক, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন, লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান এবং আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মিজান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসনের জন্য অতি দ্রুত আমাদের একজন ভিসি প্রয়োজন। দীর্ঘদিন ভিসি না থাকায় অনেক জটিলতাও দেখা দিচ্ছে। আমরা অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকেই ভিসি নিয়োগ চাই।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্বে একটি বাণিজ্যিক ক্যাম্পাসে পরিণত করা হয়েছিল এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার বলতে কিছু ছিল না। কিন্তু পরিতাপে বিষয় দেশ স্বাধীন হওয়ার মাস পার হলেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়নি। তাই আমাদের দাবি সল্প সময়ের মাঝে একজন যোগ্য, সৎ, দুর্নীতিমুক্ত, সংস্কারমনা, শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বর্তমান সংকট নিরসন করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার ড. ওয়ালীউর রহমান পিকুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক প্রফেসর ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী স্যারকে প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে গতিশীল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু রেজিস্ট্রারসহ বিভিন্ন অফিসের অফিস প্রধান ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থক হিসেবে পদত্যাগ করেছেন এবং তাদের অনেকেই দুর্নীতি ও বিভিন্ন বিতর্কিত কাজের সঙ্গে জড়িত থাকায় অফিসে আসছেন না। যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনুপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। যার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এই স্থবিরতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে আসতে পারছে না।

আর এই স্থবিরতা দুর করতে অনতিবিলম্বে একজন সৎ, ছাত্রবান্ধব এবং প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উপাচার্য নিয়োগ অপরিহার্য। এই বিষয়ে সরকারকে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দাবি জানাচ্ছি।