ঢাকা ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
রূপগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাজার থেকে ৬০০ কেজি সরকারি চাল উদ্ধার সিলেটে দুই বছরের শিশুকে ধর্ষণঃ অভিযুক্ত বালক কারাগারে নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে তাই আন্দোলনে নেমেছি : গোলাম পরওয়ার আমি যে কাজ করেছি তা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনদিন হয়নিঃ আসিফ নজরুল রূপগঞ্জে চাঁদাবাজি ও প্রবাসীদের মারধরের অভিযোগে ১২ হিজড়া গ্রেফতার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে যুবকের ৪০ কেজি দুধ দিয়ে গোসল সচিবালয়কে সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিক মুক্ত করতে সরকারের সিদ্ধান্ত কুবি শিক্ষার্থী সুমাইয়াকে ‘ধর্ষণের পর’ হত্যা করা হয়েছে: আসামির স্বীকারোক্তি ব্রাজিল সফরে প্রধান বিচারপতি

উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে দেদারসে পাচার: খাদ্যপণ্য ও গাড়ীসহ আটক-২

ইকবাল হোসাইন, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  • Update Time : ১২:৩৪:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫
  • / ২১৭ Time View

জেলার উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমারে দেদারছে পাচার হচ্ছে দেশীয় বিভিন্ন প্রকার খাদ্যপণ্য সামগ্রী।এতে জড়িত রয়েছে শক্তিশালী পাচারকারী সিন্ডিকেট। জড়িত রয়েছে অসাধু দোকানদারও। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিরাতে দুই উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে এসব পাচারযজ্ঞ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে।

এসব পয়েন্টের মধ্যে উখিয়ার বালুখালী, ধামনখালী,রহমতের বিল,পুটিবনিয়া, আঞ্জুমান পাড়া,টেকনাফেরকাটাখালী,উলুবনিয়া,হোয়াইক্যং,উনচিপ্রাং,ঝিমংখালী,নয়াবাজার,খারাংখালী,মৌলভীবাজার,হ্নীলা,ফুলের ডেইল,নাটমুরা,চৌধুরী পাড়া,লেদা, বরইতলী,জালিয়া পাড়া,সাবরাং, শাহপরীরদ্ধীপ সহ আরো বেশ কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে উভয় মুখী পাচার অব্যাহত রয়েছে।

উখিয়ার সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে যেসব পণ্য মিয়ানমারে পাচার করছে সেসব খাদ্যপণ্য সামগ্রী উখিয়ার টিএন্ডটি,হাজম রাস্তার মাথা,কুতুপালং বাজার থেকে চিহ্নিত কয়েকটি পাইকারী দোকান ও মজুতঘর থেকে রাত গভীরে ডাম্প ট্রাক, মিনি ট্রাক, পিকআপ ও সিএনজি-টমটম যোগে নিয়ে যাচ্ছে।

সীমান্তের জলসীমার নাফ নদের নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত বোট নিয়ে পাচার করছে।বিনিময়ে ওপার থেকে নিয়ে আসছে সুপারী,সিগারেট, কাপড়চোপড় ও নিষিদ্ধ ইয়াবা সহ মাদকের চালান। এদিকে ৭ ফেব্রুয়ারী মিয়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার পথে টেকনাফের নাফ নদী সীমান্ত দিয়ে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ চোরাই পণ্য জব্দ করেছে।

এ সময় ২ পাচারকারীকে আটক করেছে পুলিশ। এবং পণ্য বহনের কাজে ব্যবহৃত ২টি গাড়িও জব্দ করা হয়।

শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।

আটককৃতরা হলো, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং এলাকার নুরুল কবিরের ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৪০) ও একই এলাকার নুরুল হাসানের ছেলে মোহাম্মদ হোছন (৩৪ )। তারা জব্দ করা গাড়ি ২টির চালক এবং চোরাচালান চক্রের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ আরোও জানায়, শুক্রবার ভোর রাতে শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কের (কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক) পূর্ব পাশে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং এলাকায় নাফ নদীর বেডড়িবাঁধ সংলগ্ন কাঁচা রাস্তা দিয়ে চোরাই পণ্যের বড় একটি চালান পাচারের খবর পাওয়া যায়। এতে পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়।

একপর্যায়ে সীমান্তের দিকে ব্যাটারিচালিত ২টি ইজিবাইক আসতে দেখে পুলিশ সদস্যরা থামাতে সংকেত দেন। এতে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে গাড়ি থামিয়ে দুইজন লোক দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এ সময় ধাওয়া দিয়ে তাদের আটক করতে সক্ষম হলেও গাড়ি দুইটির পেছনে থাকা মোটরসাইকেল আরোহী ৩ জন দ্রুত পালিয়ে যায়।

পরে ইজিবাইক ২টি তল্লাশি চালিয়ে মিয়ানমারে পাচারের জন্য বহন করা ৯৫ কার্টুন বিভিন্ন প্রকারের কোমল পানীয়, ৩৮ কার্টুন বিভিন্ন প্রকারে জুস, ১০ কার্টুন তরল দুধ এবং ৩০ কেজি ওজনের দুই বস্তা মুড়ি উদ্ধার করা হয়। এ সময় চোরাইপণ্য পরিবহণ কাজে ব্যবহৃত গাড়ি দুইটি জব্দ করা হয়েছে।

ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, আটককৃতরা সংঘবদ্ধ চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য। উদ্ধার করা চোরাই পণ্যগুলো তারা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন হাটবাজার থেকে সংগ্রহ করে মিয়ানমারে পাচারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলো। আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে মিয়ানমারে হরদম পাচারের ফলে এপারের বাজার সমুহে নিত্যপণ্য সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে স্থানীয় ভোক্তা সাধারণ ভোগান্তিতে পড়ছে।আর লাভবান হচ্ছে পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

Please Share This Post in Your Social Media

উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে দেদারসে পাচার: খাদ্যপণ্য ও গাড়ীসহ আটক-২

ইকবাল হোসাইন, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
Update Time : ১২:৩৪:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

জেলার উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমারে দেদারছে পাচার হচ্ছে দেশীয় বিভিন্ন প্রকার খাদ্যপণ্য সামগ্রী।এতে জড়িত রয়েছে শক্তিশালী পাচারকারী সিন্ডিকেট। জড়িত রয়েছে অসাধু দোকানদারও। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিরাতে দুই উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে এসব পাচারযজ্ঞ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে।

এসব পয়েন্টের মধ্যে উখিয়ার বালুখালী, ধামনখালী,রহমতের বিল,পুটিবনিয়া, আঞ্জুমান পাড়া,টেকনাফেরকাটাখালী,উলুবনিয়া,হোয়াইক্যং,উনচিপ্রাং,ঝিমংখালী,নয়াবাজার,খারাংখালী,মৌলভীবাজার,হ্নীলা,ফুলের ডেইল,নাটমুরা,চৌধুরী পাড়া,লেদা, বরইতলী,জালিয়া পাড়া,সাবরাং, শাহপরীরদ্ধীপ সহ আরো বেশ কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে উভয় মুখী পাচার অব্যাহত রয়েছে।

উখিয়ার সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে যেসব পণ্য মিয়ানমারে পাচার করছে সেসব খাদ্যপণ্য সামগ্রী উখিয়ার টিএন্ডটি,হাজম রাস্তার মাথা,কুতুপালং বাজার থেকে চিহ্নিত কয়েকটি পাইকারী দোকান ও মজুতঘর থেকে রাত গভীরে ডাম্প ট্রাক, মিনি ট্রাক, পিকআপ ও সিএনজি-টমটম যোগে নিয়ে যাচ্ছে।

সীমান্তের জলসীমার নাফ নদের নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত বোট নিয়ে পাচার করছে।বিনিময়ে ওপার থেকে নিয়ে আসছে সুপারী,সিগারেট, কাপড়চোপড় ও নিষিদ্ধ ইয়াবা সহ মাদকের চালান। এদিকে ৭ ফেব্রুয়ারী মিয়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার পথে টেকনাফের নাফ নদী সীমান্ত দিয়ে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ চোরাই পণ্য জব্দ করেছে।

এ সময় ২ পাচারকারীকে আটক করেছে পুলিশ। এবং পণ্য বহনের কাজে ব্যবহৃত ২টি গাড়িও জব্দ করা হয়।

শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।

আটককৃতরা হলো, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং এলাকার নুরুল কবিরের ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৪০) ও একই এলাকার নুরুল হাসানের ছেলে মোহাম্মদ হোছন (৩৪ )। তারা জব্দ করা গাড়ি ২টির চালক এবং চোরাচালান চক্রের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ আরোও জানায়, শুক্রবার ভোর রাতে শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কের (কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক) পূর্ব পাশে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং এলাকায় নাফ নদীর বেডড়িবাঁধ সংলগ্ন কাঁচা রাস্তা দিয়ে চোরাই পণ্যের বড় একটি চালান পাচারের খবর পাওয়া যায়। এতে পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়।

একপর্যায়ে সীমান্তের দিকে ব্যাটারিচালিত ২টি ইজিবাইক আসতে দেখে পুলিশ সদস্যরা থামাতে সংকেত দেন। এতে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে গাড়ি থামিয়ে দুইজন লোক দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এ সময় ধাওয়া দিয়ে তাদের আটক করতে সক্ষম হলেও গাড়ি দুইটির পেছনে থাকা মোটরসাইকেল আরোহী ৩ জন দ্রুত পালিয়ে যায়।

পরে ইজিবাইক ২টি তল্লাশি চালিয়ে মিয়ানমারে পাচারের জন্য বহন করা ৯৫ কার্টুন বিভিন্ন প্রকারের কোমল পানীয়, ৩৮ কার্টুন বিভিন্ন প্রকারে জুস, ১০ কার্টুন তরল দুধ এবং ৩০ কেজি ওজনের দুই বস্তা মুড়ি উদ্ধার করা হয়। এ সময় চোরাইপণ্য পরিবহণ কাজে ব্যবহৃত গাড়ি দুইটি জব্দ করা হয়েছে।

ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, আটককৃতরা সংঘবদ্ধ চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য। উদ্ধার করা চোরাই পণ্যগুলো তারা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন হাটবাজার থেকে সংগ্রহ করে মিয়ানমারে পাচারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলো। আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে মিয়ানমারে হরদম পাচারের ফলে এপারের বাজার সমুহে নিত্যপণ্য সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে স্থানীয় ভোক্তা সাধারণ ভোগান্তিতে পড়ছে।আর লাভবান হচ্ছে পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা।