ঢাকা ০২:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আড়ালে নাটক চলছে: মির্জা আব্বাস

রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ০৬:০৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫
  • / ২৩ Time View

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবির পেছনে সাজানো রাজনৈতিক নাটক চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, এই নাটক গণমানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরাতে এবং বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই রচিত হচ্ছে।

সোমবার (১২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন পিন্টুর ১০ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, নাসির উদ্দিনদের মতো হাজারো নেতাকর্মীর আত্মত্যাগে বিএনপি আজ এই অবস্থানে এসেছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে যে লাগাতার আন্দোলন চলছে, তা একটি সাজানো নাটক। শেখ হাসিনা অতীতেও অপকর্মের আগে মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরাতে এধরনের কৌশল অবলম্বন করেছেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ভিআইপি ট্রিটমেন্ট নিয়ে দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। অথচ সরকার কিছু জানে না, তারা কী জানে তাহলে? আওয়ামী লীগ নেতাদের দেশ ছাড়ার ঘটনা আড়াল করতেই শাহবাগে নাটক সাজানো হয়েছে।

আব্বাস অভিযোগ করেন, একটি অজনপ্রিয় দল রাজনৈতিক স্বার্থে বিএনপিকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করছে। তিনি বলেন, বিএনপি আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন কখনো করেনি। যারা এ ধরনের অভিযোগ তোলে, তারা আসলে বিএনপিকে হিংসা করে।

সরকারি প্রশাসনে বিএনপি সংশ্লিষ্টদের নিশ্চিহ্ন করে আওয়ামী ও জামাতপন্থীদের স্থান দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেন মির্জা আব্বাস।

প্রশাসনে বিএনপি সমর্থিতদের না রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে মির্জা আব্বাস বলেন, ১৭ বছর যাদের কাছে নির্যাতিত হয়েছে বিএনপি, এখন তাদের পুনর্বাসন করবে যারা এমন কথা বলেন, তারা বিএনপিকে হিংসা করে। আমার প্রশ্ন, সচিবালয়ের ভেতর এখনো আওয়ামী লীগের লোকেরা কী করে? প্রশাসনে হয় জামায়াত, নয় আওয়ামী লীগ। বিএনপিকে বাদ দেওয়া হচ্ছে সব জায়গা থেকে।

তিনি বলেন, দেশে এখন ঔপনিবেশিক শাসনের মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যারা দেশের নাগরিকই নন, তারাই আজ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা পদে বসে দেশ পরিচালনা করছেন।

তিনি আরও বলেন, এ সরকার দেশপ্রেমিক সরকার নয়। অনেক উপদেষ্টা আছেন, যারা দেশের নাগরিক না তারাই দেশ পরিচালনা করছেন। মনে হচ্ছে দেশে ঔপনিবেশিক শাসন চলছে। আমরা কেন সেন্ট মার্টিন, বাঘাইছড়ি আর সাজেক যেতে পারি না? আমাদের কি পাসপোর্ট ভিসা লাগবে, সরকারের কাছে জানতে চাই। বিএনপিই এখন পারে বিদেশি শত্রুর হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে।

এসময় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে লাগাতার আন্দোলনকে নাটক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন- কোনো অপকর্মের আগে শেখ হাসিনাও মানুষের দৃষ্টি সরাতে এমন কৌশল অবলম্বন করতেন। বিএনপি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিরোধিতা না করলেও একটি অজনপ্রিয় দল শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়ার দলকে হেয় করছে।

সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ‘মানবিক করিডোর’ ইস্যু নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, বিশ্বের কোনো অভিধানেই মানবিক করিডোর বলে কিছু নেই। এ ধরনের ধারণা জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি এনসিপি ও জামায়াতকে উদ্দেশ করে বলেন, সেন্টমার্টিন, সাজেক, করিডোর—এসব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তারা নীরব কেন? শুধু বিএনপিই কেন এসব বিষয়ে মুখ খুলবে?

আব্বাস বলেন, ভিআইপি ট্রিটমেন্ট নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন, অথচ সরকার বলে তারা কিছু জানে না। এটা কি সম্ভব?

সরকারের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত থাকার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, সন্দেহভাজন বিদেশিদের আগমন বেড়েছে, নানা ধরনের মিশন চালু হচ্ছে। সরকার যেন কোনো গোপন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ব্যস্ত।

মির্জা আব্বাস বলেন, নাসির উদ্দিন পিন্টুকে আজ যেভাবে স্মরণ করা হচ্ছে, তাতে আমি অত্যন্ত গর্বিত। এই নাসির উদ্দিনদের মতো হাজারো নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আজকের এই বিএনপি।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ওলামা দলের মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক প্রমুখ। সভার সভাপতিত্ব করেন নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু স্মৃতি সংসদের আহবায়ক সাইদ হাসান মিন্টু।

Please Share This Post in Your Social Media

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আড়ালে নাটক চলছে: মির্জা আব্বাস

রাজনীতি ডেস্ক
Update Time : ০৬:০৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবির পেছনে সাজানো রাজনৈতিক নাটক চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, এই নাটক গণমানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরাতে এবং বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই রচিত হচ্ছে।

সোমবার (১২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন পিন্টুর ১০ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, নাসির উদ্দিনদের মতো হাজারো নেতাকর্মীর আত্মত্যাগে বিএনপি আজ এই অবস্থানে এসেছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে যে লাগাতার আন্দোলন চলছে, তা একটি সাজানো নাটক। শেখ হাসিনা অতীতেও অপকর্মের আগে মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরাতে এধরনের কৌশল অবলম্বন করেছেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ভিআইপি ট্রিটমেন্ট নিয়ে দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। অথচ সরকার কিছু জানে না, তারা কী জানে তাহলে? আওয়ামী লীগ নেতাদের দেশ ছাড়ার ঘটনা আড়াল করতেই শাহবাগে নাটক সাজানো হয়েছে।

আব্বাস অভিযোগ করেন, একটি অজনপ্রিয় দল রাজনৈতিক স্বার্থে বিএনপিকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করছে। তিনি বলেন, বিএনপি আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন কখনো করেনি। যারা এ ধরনের অভিযোগ তোলে, তারা আসলে বিএনপিকে হিংসা করে।

সরকারি প্রশাসনে বিএনপি সংশ্লিষ্টদের নিশ্চিহ্ন করে আওয়ামী ও জামাতপন্থীদের স্থান দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেন মির্জা আব্বাস।

প্রশাসনে বিএনপি সমর্থিতদের না রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে মির্জা আব্বাস বলেন, ১৭ বছর যাদের কাছে নির্যাতিত হয়েছে বিএনপি, এখন তাদের পুনর্বাসন করবে যারা এমন কথা বলেন, তারা বিএনপিকে হিংসা করে। আমার প্রশ্ন, সচিবালয়ের ভেতর এখনো আওয়ামী লীগের লোকেরা কী করে? প্রশাসনে হয় জামায়াত, নয় আওয়ামী লীগ। বিএনপিকে বাদ দেওয়া হচ্ছে সব জায়গা থেকে।

তিনি বলেন, দেশে এখন ঔপনিবেশিক শাসনের মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যারা দেশের নাগরিকই নন, তারাই আজ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা পদে বসে দেশ পরিচালনা করছেন।

তিনি আরও বলেন, এ সরকার দেশপ্রেমিক সরকার নয়। অনেক উপদেষ্টা আছেন, যারা দেশের নাগরিক না তারাই দেশ পরিচালনা করছেন। মনে হচ্ছে দেশে ঔপনিবেশিক শাসন চলছে। আমরা কেন সেন্ট মার্টিন, বাঘাইছড়ি আর সাজেক যেতে পারি না? আমাদের কি পাসপোর্ট ভিসা লাগবে, সরকারের কাছে জানতে চাই। বিএনপিই এখন পারে বিদেশি শত্রুর হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে।

এসময় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে লাগাতার আন্দোলনকে নাটক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন- কোনো অপকর্মের আগে শেখ হাসিনাও মানুষের দৃষ্টি সরাতে এমন কৌশল অবলম্বন করতেন। বিএনপি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিরোধিতা না করলেও একটি অজনপ্রিয় দল শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়ার দলকে হেয় করছে।

সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ‘মানবিক করিডোর’ ইস্যু নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, বিশ্বের কোনো অভিধানেই মানবিক করিডোর বলে কিছু নেই। এ ধরনের ধারণা জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি এনসিপি ও জামায়াতকে উদ্দেশ করে বলেন, সেন্টমার্টিন, সাজেক, করিডোর—এসব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তারা নীরব কেন? শুধু বিএনপিই কেন এসব বিষয়ে মুখ খুলবে?

আব্বাস বলেন, ভিআইপি ট্রিটমেন্ট নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন, অথচ সরকার বলে তারা কিছু জানে না। এটা কি সম্ভব?

সরকারের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত থাকার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, সন্দেহভাজন বিদেশিদের আগমন বেড়েছে, নানা ধরনের মিশন চালু হচ্ছে। সরকার যেন কোনো গোপন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ব্যস্ত।

মির্জা আব্বাস বলেন, নাসির উদ্দিন পিন্টুকে আজ যেভাবে স্মরণ করা হচ্ছে, তাতে আমি অত্যন্ত গর্বিত। এই নাসির উদ্দিনদের মতো হাজারো নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আজকের এই বিএনপি।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ওলামা দলের মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক প্রমুখ। সভার সভাপতিত্ব করেন নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু স্মৃতি সংসদের আহবায়ক সাইদ হাসান মিন্টু।