ঢাকা ১০:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না: জিএম কাদের

নওরোজ রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ০৮:০৬:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩
  • / ৯৩ Time View

আওয়ামী লীগ তাদের নামে তারা নির্বাচন করে। সরকার নিজের ফলাফল নিজেই ঘোষণা করে। এদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, আমরা চাই নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। সেই সরকার নির্বাচিত হতে হবে। যে সরকার নিজেই নিজের ফল ঘোষণা করতে পারে তাকে নির্বাচিত সরকার বলা যায় না।

তিনি বলেন, এরশাদের সময় দলীয়করণ হয়নি। ১৯৯১ থেকে দলীয়করণ হয়। আওয়ামী লীগ রাস্তার অন্ধলোক থেকেও চাঁদাবাজি করে। আওয়ামী লীগ বৈষম্য সৃষ্টি করছে। আওয়ামী লীগ না করলে দেশে কারো চাকরি হয় না।

সরকারের সব জায়গায় তাদের লোক বসানো হয়েছে উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আওয়ামী লীগ করা দুর্নীতিবাজদের সাটিফিকেট দিচ্ছে। সরকার সব জায়গায় আওয়ামীকরণ করে রেখেছে।

আওয়ামী লীগ নামে ও বেনামে সরকার হয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে জিএম কাদের বলেন, তারা তাদের সরকারের জন্য কাজ করছে। তারা কাজ করছে তাদের সরকারের জন্য। কিছু মানুষ প্রশাসনে আছে, পুলিশে আছে। সরকারি বিভিন্ন  বিভাগে আছে। তারা আগ বাড়িয়ে বলেন আমরা আওয়ামী পরিবার। আমরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ করেছি। তারা আওয়ামী লীগের সভায় যান, শ্লোগান দেন এবং আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলেন। এরা হচ্ছে বেনামে আওয়ামী লীগ। এখন ডেমক্রেসির পরিবর্তে আওয়ামীক্রেসি চলছে।

‘গভর্নমেন্ট অব দ্য আওয়ামী লীগ, গভর্নমেন্ট বাই দ্য আওয়ামী লীগ এবং গভর্নমেন্ট ফর দ্য আওয়ামী লীগ। এটা কখনোই ডেমক্রেসি হতে পারে না’, বলেও মন্তব‌্য করেন তিনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সংবিধানের দোহাই দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে চায় না। সরকারের নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না।

তিনি বলেন, এরশাদ সাহেবের দেশ পরিচালনার সময়কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১০ নভেম্বর ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত সামরিক আইন জারির মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হয়েছে। ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে আইনসম্মত ভাবে দেশ পরিচালনা করেছেন। প্রথম ভাগকে আদালত অবৈধ বলেছে, কারণ সংবিধান সম্মতভাবে হয়নি। যদি জনগণের কল্যাণে কাজ হয়ে থাকে তাকে অবশ্যই বৈধ বরা যায়।

‘১৮৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে অওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াত তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিলো। ১৯৯৬ সালে আবার বিএনপির বিরুদ্ধে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিলো আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামী। আরেকটি তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আরেকটি আন্দোলন এখন চলছে,’ জানান জিএম কাদের।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে একটি নির্বাচন হবার কথা ছিলো, তখন তত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটি আন্দোলন হয়েছিলো। সেই সময়ে ওয়ান ইলেভেন এসেছিলো। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সালে বলেছিলেন, আমরা চিরস্থায়ী ভাবে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চাই। এখন তারা সংবিধানের দোহাই দিয়ে নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন। ১৯৯১ সালে তত্বাবধায়ক সরকার গঠন সংবিধান মতো ছিলো না। পরবর্তীতে সংসদে এর বৈধতা দেওয়া হয়েছে। ২০০৮ সালে ওয়ান ইলেভের এর সময় অনির্দিষ্টকালের জন্য নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিলো তাও সংবিধান মতো ছিলো না। আবারো নবম সংশোধনীর মাধ্যমে বৈধতা দেওয়া হয়েছিলো। সংবিধান সবাই মেনে চলেছি তা তো নয়।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের সংস্কৃতিকে বিতর্কিত করছে। মাদকের ছোবলে যুব সমাজকে নষ্ট করছে। দেশে আওয়ামী ত্রাস চলছে। দেশের মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্র হলেও সরকারের খবর নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

আওয়ামী লীগের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না: জিএম কাদের

নওরোজ রাজনীতি ডেস্ক
Update Time : ০৮:০৬:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩

আওয়ামী লীগ তাদের নামে তারা নির্বাচন করে। সরকার নিজের ফলাফল নিজেই ঘোষণা করে। এদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, আমরা চাই নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। সেই সরকার নির্বাচিত হতে হবে। যে সরকার নিজেই নিজের ফল ঘোষণা করতে পারে তাকে নির্বাচিত সরকার বলা যায় না।

তিনি বলেন, এরশাদের সময় দলীয়করণ হয়নি। ১৯৯১ থেকে দলীয়করণ হয়। আওয়ামী লীগ রাস্তার অন্ধলোক থেকেও চাঁদাবাজি করে। আওয়ামী লীগ বৈষম্য সৃষ্টি করছে। আওয়ামী লীগ না করলে দেশে কারো চাকরি হয় না।

সরকারের সব জায়গায় তাদের লোক বসানো হয়েছে উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আওয়ামী লীগ করা দুর্নীতিবাজদের সাটিফিকেট দিচ্ছে। সরকার সব জায়গায় আওয়ামীকরণ করে রেখেছে।

আওয়ামী লীগ নামে ও বেনামে সরকার হয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে জিএম কাদের বলেন, তারা তাদের সরকারের জন্য কাজ করছে। তারা কাজ করছে তাদের সরকারের জন্য। কিছু মানুষ প্রশাসনে আছে, পুলিশে আছে। সরকারি বিভিন্ন  বিভাগে আছে। তারা আগ বাড়িয়ে বলেন আমরা আওয়ামী পরিবার। আমরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ করেছি। তারা আওয়ামী লীগের সভায় যান, শ্লোগান দেন এবং আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলেন। এরা হচ্ছে বেনামে আওয়ামী লীগ। এখন ডেমক্রেসির পরিবর্তে আওয়ামীক্রেসি চলছে।

‘গভর্নমেন্ট অব দ্য আওয়ামী লীগ, গভর্নমেন্ট বাই দ্য আওয়ামী লীগ এবং গভর্নমেন্ট ফর দ্য আওয়ামী লীগ। এটা কখনোই ডেমক্রেসি হতে পারে না’, বলেও মন্তব‌্য করেন তিনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সংবিধানের দোহাই দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে চায় না। সরকারের নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না।

তিনি বলেন, এরশাদ সাহেবের দেশ পরিচালনার সময়কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১০ নভেম্বর ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত সামরিক আইন জারির মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হয়েছে। ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে আইনসম্মত ভাবে দেশ পরিচালনা করেছেন। প্রথম ভাগকে আদালত অবৈধ বলেছে, কারণ সংবিধান সম্মতভাবে হয়নি। যদি জনগণের কল্যাণে কাজ হয়ে থাকে তাকে অবশ্যই বৈধ বরা যায়।

‘১৮৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে অওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াত তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিলো। ১৯৯৬ সালে আবার বিএনপির বিরুদ্ধে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিলো আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামী। আরেকটি তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আরেকটি আন্দোলন এখন চলছে,’ জানান জিএম কাদের।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে একটি নির্বাচন হবার কথা ছিলো, তখন তত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটি আন্দোলন হয়েছিলো। সেই সময়ে ওয়ান ইলেভেন এসেছিলো। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সালে বলেছিলেন, আমরা চিরস্থায়ী ভাবে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চাই। এখন তারা সংবিধানের দোহাই দিয়ে নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন। ১৯৯১ সালে তত্বাবধায়ক সরকার গঠন সংবিধান মতো ছিলো না। পরবর্তীতে সংসদে এর বৈধতা দেওয়া হয়েছে। ২০০৮ সালে ওয়ান ইলেভের এর সময় অনির্দিষ্টকালের জন্য নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিলো তাও সংবিধান মতো ছিলো না। আবারো নবম সংশোধনীর মাধ্যমে বৈধতা দেওয়া হয়েছিলো। সংবিধান সবাই মেনে চলেছি তা তো নয়।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের সংস্কৃতিকে বিতর্কিত করছে। মাদকের ছোবলে যুব সমাজকে নষ্ট করছে। দেশে আওয়ামী ত্রাস চলছে। দেশের মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্র হলেও সরকারের খবর নেই।