অটো রাইস মিলে পায়ুপথে বাতাস ঢুকানোয় শ্রমিকের মৃত্যু, আটক ১

- Update Time : ১২:০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩
- / ৩১৭ Time View
ইলেকট্রিক পাম্প মেশিন দিয়ে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে অধীর চন্দ্র রায় (৬৫) নামে এক শ্রমিককে মেরে ফেলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের পাকুরের তল এলাকার নমির উদ্দিন অটো রাইস মিলে এই ঘটনা ঘটেছে। রাত সাড়ে ১১ টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
মৃতব্যক্তি উক্ত এলাকার খালিসা ধুলিয়া মালিপাড়ার মৃত উপেন্দ্র চন্দ্র রায়ের ছেলে। রাতেই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মৃতের পরিবারকে ম্যানেজ করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে মিল মালিক হাজী নমির উদ্দিন। যে কারণে কেউ অভিযোগ না করায় লাশ দাহ করার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু খবর পেয়ে পুলিশ গেলে লাশ আনতে বাধা দেয় এলাকার মাতবরচক্র। প্রায় ২৫ ঘণ্টা দেন দরবার শেষে লাশ থানায় নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় মূল হোতা মোরশেদুল (২০) কে আটক করা হয়েছে। সে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ডাঙাপাড়ার কামালুর ছেলে এবং মিল মালিক হাজী নমির উদ্দিনের প্রতিবেশী ও আত্মীয়। ঘটনায় জড়িতরা পলাতক রয়েছে। এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনার পরও মিল চালু রেখেছে এবং জড়িতদের রক্ষার জন্য অপচেষ্টা চালায় মিল মালিক। ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলেও মিল মালিকের মধ্যে কোন মর্মবেদনা নেই।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার ১১ টার দিকে মিলে কাজ করাকালে মোরশেদুলসহ আরও দুইজন শ্রমিক অধীর চন্দ্র রায়ের পায়ুপথে জোরপূর্বক বাতাস ঢুকিয়ে দেয়। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘটনায় জড়িতরা সটকে পড়ে। পরে মিলের এমডি মোহাম্মদ সাবু মিয়া অসুস্থ অধীর চন্দ্র রায়কে প্রথমে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে অসুস্থতার মূল কারণ পায়ুপথে বাতাস ঢোকানোর কথা গোপন রাখা হয়। সেজন্য সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় রাত সাড়ে ১১ টায় মারা যায়।
বৃহস্পতিবার রাত ১২ টা থেকে লাশ আনতে মৃতের বাড়িতে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মফিজুল হক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজমল হোসেন সরকার, ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা পাইলট উপস্থিত থেকে ঘটনা তদারকি করছেন। কিন্তু সাংবাদিকদের উপস্থিতির কারণে ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা ভেস্তে গেছে। বাধ্য হয়ে পুলিশ লাশ থানায় নিয়ে আসে।
মিল মালিক হাজী নমির উদ্দিন বলেন, আমি মিলে ছিলাম না। তবে শুনেছি পাম্প মেশিন নিয়ে গায়ে লাগা ধানের গুড়া ঝারার সময় দুষ্টুমি করে অধীরের পিছনে লুঙ্গির ভিতরে বাতাস দেয়। শ্রমিকরা এরকম ইয়ার্কি প্রায়ই করে। তবে অধীর কয়েকদিন ধরে শরীর খারাপ থাকায় কাজে আসেনি। একারনে ও বয়স্ক হওয়ায় সামান্য বাতাসেই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। পায়ুপথে বাতাস ঢোকানো হয়নি। চিকিৎসারও কোন ত্রুটি করা হয়নি। একজন শ্রমিক মারা যাওয়ার পরও মিল চালু রেখেছেন কেন প্রশ্ন করলে তিনি নিশ্চুপ হয়ে যান।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আটক মোরশেদুলকে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়